শিরোনাম
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : | ০৪:৫৩ পিএম, ২০২০-১১-০২
খাগড়াছড়ি রাংগামাটি বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পার্বত্য অঞ্চলের উৎপাদিত কৃষিপণ্যের খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। আখ পরিষ্কার করছেন এক চাষি সম্প্রতি পানছড়ির কংচারী পাড়ায়। খাগড়াছড়ি সদরের সাতভাইয়া পাড়া এলাকার কৃষক রন্টু দেওয়ান। তাঁর এক একর পতিত জমি শুষ্ক মৌসুমে অনাবাদি পড়ে থাকত। এই জমিতে তিনি তিন বছর তামাক চাষ করেছেন। পরে কৌতূহল বশত ২০১১সালে ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা নিয়ে আখ চাষ করা যাত্রা শুরু করেন। প্রথম বছর ঠিকভাবে পরিচর্চা করতে না পারায় ২০হাজার টাকা খরচ করে মাত্র ৩০হাজার টাকা পেয়েছেন। তবে পরের বছর থেকে তিনি লাভের মুখ দেখেন।
কৃষক রন্টু দেওয়ান বলেন, গত বছর আখ চাষে ব্যয় হয়েছিল এক লাখ টাকা আর বিক্রি করেছেন দুই লাখ দশ হাজার টাকায়। লাভ হয়েছে এক লাখ টাকার ওপরে। এই বছর আরও বেশি দাম পাওয়ার আশা করছেন। এই আখ চাষই তাঁকে এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। আখ চাষ করে কিনেছেন দুটি সিএনজি চালিত অটো রিকশা। শুধু রন্টু দেওয়ান নয়, খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলাতে বর্তমানে এক হাজারের বেশি কৃষক আখ চাষের সঙ্গে জড়িত। পতিত জমিতে তামাকের বদলে তাঁরা আখ চাষ করছেন।
খাগড়াছড়ি ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এই বছর আখের আবাদ বেড়েছে। ২০১৭-২০১৮সালে আবাদ করা হয় ৫২০হেক্টর জমিতে। ২০১৮-২০১৯সালে আবাদ হয়েছে ৫৪০হেক্টরে। তার মধ্যে পতিত জমি ছিল প্রায় ২০০হেক্টর। গত বছর আখ বিক্রি করে কৃষকেরা পেয়েছেন ১৮কোটি ৯০লাখ টাকা। এ বছর ২৭কোটি ৫৩লাখ টাকার আখ বিক্রি হয়েছে বলে আশা করেছেন। গত বছর আখ চাষ করে লাভ হয়েছে এক লাখ টাকার ওপরে, এই বছর আরও বেশি আশা করেন প্রান্তিক চাষি।
খাগড়াছড়ি ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক দিবাকর চাকমা বলেন, বর্তমানে যে কৃষকেরা আখ চাষ করছেন তাঁদের দুই-তৃতীয়াংশই বেশি লাভের আশায় একসময় তামাক চাষ করতেন। তিনি বলেন, ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে কৃষকদের প্রণোদনা প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য করা হয়েছে। পতিত পাহাড়ি জমি এবং তামাকের জমিতে আখ চাষ করতে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। বর্তমানে আখ চাষে লাভবান হওয়ায় অনেক কৃষক তামাক ছেড়ে নিজেরাই আখ চাষ করতে শুরু করেছেন।
খাগড়াছড়ি পানছড়ি আন্ত: প্রধান সড়কের পেড়াছড়ার গিরিফুল, ছোটনালা, শিবমন্দির, মুনিগ্রাম, দেওয়ানপাড়া, পাগুজ্জাছড়িসহ কয়েকটি এলাকায় সড়কের দুই পাশে, পতিত জমিতে সারি সারি আখ খেত। কয়েকটি খেত থেকে চাষিরা আখ কাটছিলেন।
কথা হয় আখচাষি প্রীত রঞ্জন চাকমার সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই একর পতিত জমিতে একসময় তামাক চাষ করতেন তিনি। বাজারে চাহিদা ভালো থাকায় আট বছর আগে আখ চাষ শুরু করেন তিনি। গত বছর আখ চাষে ব্যয় হয় প্রায় দুই লাখ টাকা। আর বিক্রি করেছেন তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকায়। লাভ হয়েছে দেড় লাখ টাকার মতো। আখ বিক্রির টাকা দিয়ে পাকা ঘরও করেছেন। দুই লাখ টাকায় কিনেছেন একটি ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা।
এদিকে গতবছরের তুলনায় এবার আখ’র ফলন ও লাভ ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকও। কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিদিন খাগড়াছড়ি বড় বাজার, পানছড়ি, ভাইবোনছড়া, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, মানিকছড়ির গাড়িটানাসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারি আখ বিক্রি করা হয়ে থাকে। এসব আখ চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চাহিদা মেটাতে। এছাড়াও জেলা ও ৯টি উপজেলার বাজারগুলোতে হাতের নাগালেই মিলছে মিষ্টি রসালো আখ। সবচেয়ে বেশি আখ’র চাষ হয়েছে থাগড়াছড়ির সদর উপজেলা, পানছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়ি ও মানিকছড়ি উপজেলায়।
খাগড়াছড়ির সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া দেওয়ান পাড়া এলাকার আখ চাষি হিরঞ্জন চাকমা বলেন, এবছর দুই একর জায়গায় ৫০হাজার আখ চারা লাগিয়েছি। ফলনও হয়েছে ভালো। চাষ করা জমি থেকেই সব আখ পাইকারি দামে বিক্রি করে দিয়েছি। সামনের বছর আরো বড় পরিসরে আখ’র চাষ করবো।
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে আখ বিক্রি করতে আসা মহালছড়ির লেমুছড়ি এলাকার চাষি মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, গত বছর দুই কানি জমিতে ২০হাজার আখ’র চারা লাগিয়েছি। সেই জায়গায় ৭০হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। তবে এবার লাভ দ্বিগুণ।
আখ চাষিরা জানান, সাধারণত আখ রোপণ করা হয় দুই মেয়াদে। প্রথমবার রোপণ করা হয় সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এবং দ্বিতীয়বার ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহে। আখ কাটা হয় সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরে। অনেক কৃষক আবার ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এই তিন মাসের যেকোনো সময় আখ কাটেন। আখের ফলন পেতে ১০থেকে ১২মাস সময় লাগে। এর মধ্যে আখ অন্যতম। উচু-নিচু পাহাড় পতিত জমি বেষ্টিত পাদদেশে উর্বর মাটিতে ন্যুনতম বিষমুক্ত আখ চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন পাহাড়ের প্রান্তিক কৃষক। ক্রমে বাড়ছে আখ চাষি ও জমির পরিমাণ। এবার জেলা ৯টি উপজেলাতে আখ’র বাম্পার ফলন হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে সুস্বাদু মিষ্টি পাহাড়ি এই আখ।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: মর্ত্তুজ আলী বলেন, খাগড়াছড়ির পাহাড়ি মাটি আখ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বর্তমানে ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে পরিকল্পিত ভাবে চাষ করার জন্য নতুন জাতের আখ চাষিদের সরবরাহ করা হচ্ছে। এখানকার অনুকূল আবহাওয়া এবং রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় আখের ফলন ভালো হওয়ায় আখ চাষিরা লাভবান হচ্ছে। এমনিতে পাহাড়ের মাটি অনেক উর্বর। তবে আবহাওয়ার কারণে কখনো ফলন ভালো হয় কখনো খারাপ। তবে চলতি বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে।
কক্সবাজার প্রতিনিধি: : কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাজেদ সওয়ার জুয়েল রানা (২০) নামে এক মাদক কারবারিকে আট...বিস্তারিত
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : : পাহাড়ে অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত আঞ্চলিকদল জেএসএস এর সক্রিয় এক সন্ত্রাসীকে আটক কর...বিস্তারিত
কক্সবাজার প্রতিনিধি: : টেকনাফে বঙ্গোপসাগরে রোহিঙ্গাবাহী মালয়েশিয়াগামী ট্রলারডুবির ঘটনায় রোহিঙ্গাসহ ২৪ জনকে আসামি করে ...বিস্তারিত
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : : ভারী বর্ষণের ফলে রাঙামাটির সাজেকে সড়কের উপর পাহাড় ধ্বস হয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে কয়েক...বিস্তারিত
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : : খাগড়াছড়িতে সাফ জয়ী তিন ফুটবল খেলোয়াড়সহ চারজনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সক...বিস্তারিত
বান্দরবান প্রতিনিধি : : বান্দরবানের লামা উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited