চট্টগ্রাম   মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪  

শিরোনাম

পাটের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা দরকার

ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ    |    ০৪:৩১ পিএম, ২০২২-০৩-০৬

পাটের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা দরকার

 

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে সোনালি আঁশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা তুলে ধরার লক্ষ্যে আজ ৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস-২০২২’ উদযাপন করতে যাচ্ছে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।

এ উপলক্ষে গত  বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে দিবসটি উদযাপনের কর্মসূচি তুলে ধরা হয়। এবারের জাতীয় পাট দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ’।আজকের বিষয় নিয়ে কলাম লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক ও জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা.এম এম মাজেদ তাঁর কলামে লিখেন..প্রাচীন কাল থেকেই বাংলাদেশে পাটের চাষ ও ব্যবহার চলে আসছে। বিগত দুশো বছরের অধিক সময় ধরে বহু চড়াই উৎরাই এর মধ্য দিয়ে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে পাট এ অঞ্চলের মানেুষের অতি পরিচিত অর্থকরী ফসল। পাট গাছঃ দেশী ও তোষা  দু’প্রজাতির পাট গাছের ছাল থেকে আহরিত আঁশ পাট নামে পরিচিত যা বাংলাদেশের সোনালী আঁশ নামে সমাধিক পরিচিত। মনে করা হয় সংস্কৃত শব্দ পট্ট থেকে পাট শব্দের উদ্ভব হয়েছে। পাটের ইংরেজি নাম জুট সম্ভবতঃ উড়ে (উড়িষ্যা, ভারত) ভাষা থেকে এসেছে। পাট একটি বর্ষজীবী ফসল। এর জীবনকাল ১০০ থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত। চৈত্র/বৈশাখ থেকে আষাঢ়/শ্রবণ। পাট বৃষ্টি নির্ভর ফসল। বায়ুর আদ্রতা ৬০% থেকে ৯০% এর পছন্দ। পাট চাষে কোনো রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োজন হয় না। গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ২ টন। পাটের আঁশঃ পাটের আঁশ নরম উজ্জ্বল চক্চকে এবং ১-৪ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে একক আঁশ কোষ ২-৬ মিলি মিটার লম্বা এবং ১৭-২০ মাইক্রণ মোট হয়। পাটের আঁশ প্রধানত সেলুলোজ এবং লিগনিন দ্বারা গঠিত। সাধারণত: পাট গাছ জৈব প্রক্রিয়ায় পানিতে জাগ দিয়ে আঁশ ছাড়ানো হয়। ব্যবহারঃ পাট পরিবেশ বান্ধব, বহুমুখী ব্যবহার যোগ্য আঁশ ।শিল্প বিপ্লবের সময় ফ্লাক্স এবং হেম্প এর স্থান দখল করে পাটের যাত্রা শুরু। বস্তা তৈরির ক্ষেত্রে পাট এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান জুড়ে আছে। পাটের আঁশের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অন্য অনেক আঁশের সঙ্গে মিশ্রণ করে ব্যবহার করা যায়। টেক্সটাইলঃ প্রচলিত বয়ন শিল্পে পাটের উল্লেখযোগ্য ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে সুতা, পাকানো সুতা, বস্তা, চট, কার্পেট ব্যাকিং ইত্যাদি। পাট আঁশের রয়েছে উচ্চ মাত্রার টান শক্তি, সীমিত প্রসারতা এবং বস্ত্রের স্থায়ীত্ব। পর্দার কাপড়, কুশন কভার, কার্পেট, ইত্যাদি পাট থেকে তৈরি হয়। গরম কাপড় তৈরীর জন্য উলের সঙ্গে মিশ্রণ করা হয়। মোড়কঃ কৃষি পণ্য এবং অন্যান্য দ্রব্যাদি বস্তাবন্দি ও প্যাকিং করার জন্য ব্যাপকভাবে পাট ব্যবহার করা হয়। উপজাতঃ পাটের আঁশের বহুমুখী ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে প্রসাধনী, ওষুধ, রং ইত্যাদি। পাট খড়ি জ্বালানী, ঘরের বেড়া, ঘরের চালের ছাউনীতে ব্যবহার হয়। বাঁশ এবং কাঠের বিকল্প হিসাবে পার্টিকেল বোর্ড, কাগজের মন্ড ও কাগজ তৈরিতেও পাট খড়ি ব্যবহৃত হয়। উৎপাদন কারীঃ পাট দক্ষিণ এশিয়ার একটি ফসল। বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশের ফসল। উৎপাদিত আঁশের ৯৫% ভারত ও বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়। নেপাল এবং মায়েনমারেও কিছু পাট উৎপাদিত হয়। উৎপাদন এবং ব্যবসাঃ আবহাওয়া এবং দামের ওপর ভিত্তি করে পাটের উৎপাদন ওঠানামা করে।আর পাটের বহুমুখীকরণ আজ সময়ের দাবি একসময় পাট ছিল আমাদের একমাত্র রপ্তানি পণ্য। কিন্তু বিদেশি চক্রান্ত ও সুদক্ষ পরিচালনা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে প্রায় মরে গেছে এ শিল্প। বর্তমান সরকার এ খাতকে গতিসঞ্চার করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যার ফলও আমরা হাতে-নাতে পাচ্ছি। সম্প্রতি পাটের উৎপাদন বাড়ছে। কৃষিজমির হ্রাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ‘পাট চাষ জোন’ গড়ে তোলা যেতে পারে। পাটপণ্যের পাশাপাশি হরেক, বাহারি, নিত্যব্যবহার্য, ফ্যাশনেবল বহুমুখী পাটসামগ্রীর প্রসার ও বিপণন এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন গতি সঞ্চার করেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের মোট পাটের ৩৩ শতাংশ উৎপাদন করে এবং কাঁচা পাটের প্রায় ৯০ শতাংশই রপ্তানি করে। আমাদের ব্যবহারিক জীবনে পাটের গুরুত্ব অপরিসীম। এই পাট থেকে উৎপাদিত পণ্য (যেমন- বস্ত্র, থলে, দড়ি, কাছি, সূক্ষ্ম বস্ত্র ও কার্পেট প্রভৃতি) আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিনিয়ত ব্যবহার হয়ে থাকে। এই বাংলাদেশের পাট থেকে তৈরি ‘জুটন’ পৃথিবীর নানা দেশে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। আমাদের পাটকলের তৈরি কার্পেট পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে এখনো বিশেষভাবে সমাদৃত। এ ছাড়া পাটের তৈরি ঝুড়ি, শিকে এবং কারুকাজশোভিত অন্য দ্রব্য বিদেশিদের শুধু দৃষ্টি কাড়ছে। এগুলো রপ্তানি করে বাংলাদেশ এখনো যথেষ্ট পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। বাজারে পাটের তৈরি চালের বস্তা ও সুতলি থেকে গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় প্রায় ১০০ কোটি টাকার বহুমুখী পাটপণ্যের বাজার সৃষ্টি হয়েছে। পাটপণ্যের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের নান্দনিক ব্যাগ, সেমিনার ফাইল ও প্রমোশনাল পণ্য, নানা ধরনের গৃহস্থালি, বাহারি সাজসজ্জায় ব্যবহৃত পণ্যসামগ্রী অন্যতম।

পাটের বহুমুখীকরণ করতে হবে। পাটের বহুমুখীকরণ যত বাড়ানো যাবে ততই পাটের অর্থনীতিতে অবদান বাড়বে। শুধু পাটেই নয়- যেকোনো পণ্যের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। আমরা যতই আধুনিক হচ্ছি ততই রুচিবোধে ভেরিয়েশন আসছে। আর এ কারণেই বহুমুখীকরণ ছাড়া অন্য উপায় কমফলপ্রসূ হবে। মানুষের রুচির ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে এবং তা অতি দ্রুততার সঙ্গে পরিবর্তন হচ্ছে। খাপ খাওয়াতে তাই পাটের বহুমুখীকরণে সুষ্ঠু পরিকল্পনা দরকার। পাটের মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০ ও বিধিমালা-২০১৩ আছে। পলিথিন উৎপাদন, বিপণন, ব্যবহার বন্ধ ও পাটপণ্যের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে চাহিদা অনুযায়ী গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন এবং এর প্রচার বাড়াতে হবে। মানসম্মত পাট উৎপাদন, পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, পাটপণ্যের বহুমুখীকরণ, পাটকলের আধুনিকায়ন, পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণ এই পাঁচটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে ‘জাতীয় পাটনীতি-২০১৮’-এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাটের গুরুত্বের বিষয়টি সরকারের আন্তরিকতা প্রশ্নাতীত। কারণ বর্তমান সরকারের উদ্যোগে ২০১৭ সালেই সর্বপ্রথম ৬ মার্চকে জাতীয় পাট দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সরকার ২০১০ সাল পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। দেশ-বিদেশে পাটের বাজার পুনরুজ্জীবিত করতে ‘পাট আইন-২০১৭’ যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।

পাটের উন্নয়ন ও বহুমুখীকরণের জন্য প্রশিক্ষণের পাশাপাশি দরকার গবেষণা। এ ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। কৃষিক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা হয়। তার ফলেই কৃষিতে আমাদের প্রচুর উন্নতি হয়েছে। আসলে কোনো বিষয়/সেক্টরে উন্নয়নের জন্য প্রচুর গবেষণার ক্ষেত্র থাকতে হবে। অদৃশ্য এ উন্নয়নে আমাদের জোর দিতে হবে। এটা অবশ্য সব সেক্টরের জন্য প্রযোজ্য বলে আমি মনে করি। ভালোমানের বীজের অভাব সব সময়েই থাকে। অনেক ক্ষেত্রে চোরাইপথে আসা ভারতীয় নিম্নমানের পাটের বীজে আশানুরূপ ফল পাই না আমরা। নিজস্ব বীজ উৎপাদনের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত সরকারি নিয়ন্ত্রণে ভালো বীজ আমদানি করে কৃষকের মধ্যে বিতরণ/বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পাট চাষ, সংরক্ষণ ও বিতরণের উন্নয়নে কৃষিঋণের সহজীকরণ করতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংকগুলোর ওপর তদারকি বাড়াতে হবে। পাটের কম দাম পান প্রান্তিক কৃষকরা। কৃষকের চেয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরা বেশি লাভবান হয়। অনেক ক্ষেত্রে বিনা পুঁজিতে কৃষকের মাথায় ব্যবসা করে থাকে। তাদের কোনো লোকসানের ভয় নেই; কিন্তু কৃষকের লোকসানের আশঙ্কা থাকে। তারা আবার সিন্ডিকেটও তৈরি করে থাকে। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি পাট কেনার ব্যবস্থা বাড়াতে হবে। এই নেতিবাচক দিকগুলো শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এতে কৃষকরা লাভবান হবে এবং পাট চাষে ঝুঁকবেন। পাট-সংশ্লিষ্ট কুটিরশিল্পের জোরদারকরণ প্রকল্প হাতে নিতে হবে। দক্ষ জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে বহুমুখীকরণে তাড়াতাড়ি ফল পাব আমরা। তাদেরও পুনঃপুনঃ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ থেকে দক্ষতর জনবল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে বৈচিত্র্য আনতে পারব। সরকারের নতুন নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারবে তারা। পাট ও পাটসামগ্রী বিপণনে হাটবাজার সম্প্রসারণ করতে হবে, গুদাম মেরামতবা নতুন তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থাকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

সোনালি ব্যাগের প্রসারের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষতিকারক পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে এতে আকৃষ্ট করতে হবে। প্রয়োজনে প্রথমদিকে সোনালি ব্যাগের উন্নয়ন/ব্যবহারে ভর্তুকির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আমদানি করা পচনশীল পলিমার ব্যাগের যে দাম তার পাঁচ ভাগের এক ভাগ দামেই পাওয়া যাবে সোনালি ব্যাগ। বর্তমানে এক কেজি পলিথিন তৈরি করতে ২০০-২৫০ টাকা খরচ হয়। এর চেয়ে ৫০-১০০ টাকা বেশিতেই পাওয়া যাবে প্রতি কেজি সোনালি ব্যাগ। ব্যাগটির দাম কমিয়ে দেবে মূলত এর বিভিন্ন বাই-প্রডাক্ট (উপজাত)। এর গুরুত্বপূর্ণ দুটি বাই-প্রডাক্ট হলো লিগনিন ও হেমোসেলুলোজ। বিভিন্ন ধরনের কসমেটিক সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার করা হয় লিগনিন। এটি ভালো দামে বিক্রি হবে। আর হেমোসেলুলোজ সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পাটের যে আঁশ এই ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় তার মাত্র ২-৩ শতাংশ উচ্ছিষ্টাংশ হিসেবে বেরিয়ে আসবে। বাকি ৯৭-৯৮ শতাংশই হবে কোনো না কোনো প্রডাক্ট। পাট একটি পরিবেশবান্ধব পণ্য। পরিবেশবিনাশী পলিথিন এমন একটি রাসায়নিক বস্তু যা পচনশীল নয়। এটি পোড়ালেও দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়া বের হয়ে পরিবেশ নষ্ট করে দেয়। এটি যেখানে পড়ে থাকে সেখানে থেকেই কৃষি ফসলের জমিতে মাটির রস চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে। বিভিন্ন খাল-বিল, নদী-নালা, ড্রেন, নর্দমা- সব জায়গায় পরিত্যক্ত পলিথিন জমে জমে পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে থাকে। সেজন্যই পলিথিনের বিকল্প হিসেবে শুধু বাংলাদেশে নয়, আমাদের প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে ‘ক্যারিং ব্যাগ’ হিসেবে পাটের তৈরি ব্যাগ অনায়াসে ব্যবহার করা হচ্ছে।

পাটের কোনো কিছুই ফেলনা নয়। ছোট-বড় সব ধরনের পাটগাছ থেকে পাতা নিয়ে পুষ্টিকর পাটশাক খাওয়া যায়। এ পাটশাক শুকনো হিসেবেও দীর্ঘদিন ঘরে সংরক্ষণ করে খাওয়ার সুযোগ থাকে। পাটের পুরো মৌসুমে জমির মধ্যে যে পাতা পড়ে, তা ওই জমির জৈব পদার্থযোগে উর্বরতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। পাটের শিকড়, গাছ, পাতা থেকে সার যোগ হলে পরবর্তী ফসল আবাদে ওই জমিতে আর কোনো বাড়তি সার প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। জনগণের মধ্যে দেশীয় পণ্যের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া। সর্বনাশা পলিথিনের ব্যবহার
সম্পন্ন রুপে বন্ধ করে সুলভ ও আকর্ষণীয় পাটপণ্য তৈরি করার প্রতি জোর দিতে হবে। এ জন্য শ্রমব্যবস্থাপনায় আধুনিক ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষকতা, শ্রমিক-স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধিক মনোযোগ দিতে হবে। পাটশিল্পে দক্ষ কর্মী সৃষ্টিতে অধিক ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা দরকার। পাট একটি পরিবেশবান্ধব বস্তু। পাট থেকে উন্নতমানের ভিসকস সুতা উৎপাদন হয়। যার সুতি কাপড় থেকে ও বাজারমূল্য বেশি। পাটখড়ি জ্বালানির প্রধান উৎস হলে কয়েক বছর ধরে পাটখড়ির চারকোল বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, আয় হচ্ছে হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে পাট থেকে তৈরি হচ্ছে চা। এতে জীবনরক্ষাকারী উপাদান আছে।আর বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের মধ্যে ১৭টির ইজারা দিবে সরকার। এসব কলের ৫টি চট্টগ্রাম অঞ্চলের, ঢাকা অঞ্চলের ৪টি ও খুলনা অঞ্চলের ৮টি।  

বিজেএমসির তথ্যানুযায়ী, ঢাকা জোনে পাটকল ৭টি। যার মধ্যে চারটি ইজারা দেওয়া হবে। পাটকলগুলো হচ্ছে: ইউএমসি জুট মিল, নরসিংদী; বাংলাদেশ পাটকল, ঘোড়াশাল; রাজশাহী জুট মিল ও জাতীয় পাটকল, সিরাজগঞ্জ।  

চট্টগ্রাম জোনে কল ১০টি, যার মধ্যে পাঁচটি ইজারা দেওয়া হবে। কলগুলো হচ্ছে- হাফিজ জুট মিল, সীতাকুন্ড থেকে এম.এম. পাটকল এবং আর.আর জুট মিলস; কুমিরার গুল আহমেদ জুট মিলস; এবং রাঙ্গুনিয়ার কেএফডি জুট মিল।    

খুলনা জোনে আটটি পাটকল এবং এই সবগুলো কলই ইজারাভুক্ত হবে। এগুলো হলো- প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, ক্রিসেন্ট জুট মিল, ইস্টার্ন  জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, স্টার জুট মিল, যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং কার্পেটিং জুট মিলস লি।পরিশেষে এ দেশের পরিবেশ প্রকৃতি ও আর্থ-সামাজিক পরিবেশের সাথে একাত্ম হয়ে আছে। তবে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে পাট চাষ, পাট শিল্প ও বানিজ্য লাভ জনক ভাবে চালু রাখতে হলে দক্ষ ব্যবস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। পাট নিয়ে নানাবিধ হতাশার মাঝেও দুটি বিষয় আশার আলো দেখা যায়ঃ- (১) পাটের গড় ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে (২) পাট ও ধানের মূল্যের অনুপাত বাড়ছে। নানামুখী চাপের মধ্যেও পাটকে টিকিয়ে রাখতে হলে উন্নত মানের পাট উৎপাদন করতে হবে এবং পাটের উৎপাদন খরচ কমাতে হবে।

 

লেখক, প্রতিষ্ঠাতা,জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি। 

রিটেলেড নিউজ

চট্টগ্রাম ওয়াসাকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করুন ।

চট্টগ্রাম ওয়াসাকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করুন ।

সম্পাদকীয় ডেস্ক :: : চট্টগ্রাম নগরীতে ওয়াসা ৮শ’ কিলোমিটার সঞ্চালন পাইপ লাইনের মাধ্যমে নগরের ৮০ হাজার গ্রাহকের কাছে &l...বিস্তারিত


যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোটের লক্ষ্য আসলে কী, কী সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ?

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোটের লক্ষ্য আসলে কী, কী সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ?

নাসির আহমাদ রাসেল :   ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অর্জনের লক্ষ্যে একটি নতুন অর্থনৈতিক জোট...বিস্তারিত


ন্যাচারাল ডেমোক্রেসী - নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক দর্শন

ন্যাচারাল ডেমোক্রেসী - নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক দর্শন

বরকল (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি :: :   শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ   কেন বিশ্বের বর্তমান হতাশা? পৃথিবী এখন এক যুগ সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয...বিস্তারিত


কিশোর গ্যাং এখন বড় চ্যালেঞ্জ

কিশোর গ্যাং এখন বড় চ্যালেঞ্জ

মুহাম্মদ আমির হোছা্ইন :: : শিশু-কিশোররাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। শিশু-কিশোররা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠলেই দেশ ও জ...বিস্তারিত


ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা দেশের  অর্থনীতিতে  ভুমিকা রাখেছে

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা দেশের  অর্থনীতিতে  ভুমিকা রাখেছে

আমাদের ডেস্ক : : সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের সোপানের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। করোনা মহামারির  না হলে বাংলাদ...বিস্তারিত


  জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এগিয়ে আসি 'পরিবেশ সংরক্ষণের জ্ঞানার্জন করি 

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এগিয়ে আসি 'পরিবেশ সংরক্ষণের জ্ঞানার্জন করি 

ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ : আজ আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস ২০২২।বিশ্বব্যাপী আজ রবিবার  (২২ মে) পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জী...বিস্তারিত



সর্বপঠিত খবর

নেশনস কাপের ফাইনালে মুখোমুখি সালাহ-মানে

নেশনস কাপের ফাইনালে মুখোমুখি সালাহ-মানে

স্পোর্টস ডেস্ক : : ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের জায়ান্ট লিভারপুলের জার্সিতে খেলেন দুজনেই। আক্রমণভাগে দুজনের রসায়নে অলরেড...বিস্তারিত


ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো নিয়ে পশ্চিমাদের আবারও রাশিয়ার হুশিয়ারি

ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানো নিয়ে পশ্চিমাদের আবারও রাশিয়ার হুশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : : রাশিয়ার মাটিতে আঘাত হানতে পারে— এমন সব অস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করার বিষয়ে পশ্চিমা দেশগুলোকে হু...বিস্তারিত



সর্বশেষ খবর