শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৮:২৭ পিএম, ২০২০-১১-১৮
রূপালী আক্তার নীপা (২০) নামে এক গৃহকর্মী ইয়াবার টাকা যোগারে ছিনতাইয়ে নেমেছে। পুলিশ তাকেসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর মধ্যে ৪ কিশোরীও রয়েছে।
নীপা পূর্বপরিচিত যুবকদের সঙ্গে মিশে একবছর আগে থেকে ইয়াবা সেবন শুরু করে। ইয়াবার টাকা জোগাতে জড়িয়ে পড়ে ছিনতাইয়ে। যে বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত, সেই বাসা থেকে নানা অজুহাতে বেরিয়ে ছিনতাই এবং ইয়াবা সেবন করে আবার ফিরে যেতেন। একপর্যায়ে এমন বেপরোয়া হয়ে গেছেন, গত দুইদিনে চারটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়ে দু’জনকে নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করেন। শেষ পর্যন্ত কোতোয়ালী থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন নীপা, সঙ্গে আরও দু’জন।
গ্রেফতারের পর নীপা ইয়াবার টাকা জোগাতে গৃহকর্মী থেকে ছিনতাইকারী দলে নাম লেখানোর এই তথ্য পুলিশকে জানিয়েছেন। ছিনতাই করা দু’টি মোবাইল সেট নগরীর স্টেশন রোডে বিক্রি করতে এসে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) রাতে গ্রেফতার হয় নীপা ও তার এক সহযোগী যুবক। ছিনতাই করা মোবাইলের ক্রেতাকেও এসময় গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা।
নীপার সঙ্গে গ্রেফতার দু’জন হলেন- রাকিবুল হাসান রাকিব (২৫) ও মো.আলাউদ্দিন (৫০)।
গ্রেফতার নীপা সাংবাদিকদের জানান, ভাসমানভাবে বেড়ে ওঠা নীপা দীর্ঘদিন নগরীর বগার বিল এলাকায় থাকতেন। রাকিবও একই এলাকার। তারা পূর্বপরিচিত। নীপা আরেক ছিনতাইকারী শাহআলমকে একবছর আগে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পর থেকে শাহআলম জেলেই আছেন। আর নীপা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন নগরীর দিদার মার্কেট এলাকার ফারুক টাওয়ারে মহানগর দায়রা জজ আদালতের এক বিচারকের বোনের বাসায়।
অরবিন্দু দত্তকে ছুরিকাঘাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নীপা জানান, সোমবার সন্ধ্যায় মার্কেটে যাবার কথা বলে নীপা বাসা থেকে বের হয়। ফোনে যোগযোগ করে রাকিব ও রাশেদ নামে দু’জনের সঙ্গে। তারা দেওয়ানবাজারে আসার পর তিনজন মিলে ৩০০ টাকায় একটি সিএনজি অটোরিকশা একঘন্টার জন্য ভাড়া করে। প্রথমে জামালখানে একজনের কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে স্টেশন রোডে গিয়ে ২৬০০ টাকায় সেটি বিক্রি করে। এরপর আরেকটি অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে আন্দরকিল্লা দিয়ে এসে রহমতগঞ্জ কুসুমকুমারী স্কুলের সামনে থেকে অরবিন্দু দত্তকে অনুসরণ করা শুরু করে। অরবিন্দু ঢালু সড়কের ওপর দিয়ে হেঁটে ওঠার সময় রাকিব ও নীপা নেমে তার সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমে মোবাইল দেওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু অরবন্দিু রাকিবকে জাপটে ধরে ফেলার পর তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পকেট থেকে মোবাইল নিয়ে আবারও অটোরিকশা করে স্টেশন রোডে চলে যায় তারা। ঘটনার সময় রাশেদ অটোরিকশা চালকের পাশে বসে তাকে নজরদারিতে রেখেছিল।
সেই মোবাইল তিন হাজার টাকায় বিক্রি করে। নীপা ও রাকিব ২ হাজার টাকা করে পায় এবং রাশেদকে দেওয়া হয় ১৬০০ টাকা। এরপর তিনজন মিলে ৬টি ইয়াবা কিনে নগরীর দেওয়ান বাজারে একটি নির্মাণাধীন ভবনে যায়। সেখানে ইয়াবাগুলো সেবন করে নীপা ফিরে যায় যেখানে কাজ করেন সেই বাসায়। পরদিন সন্ধ্যার দিকে আবারও ‘একটু আসছি’ বলে বের হয়ে নীপা রাকিব ও রাশেদের সঙ্গে মিলে ছিনতাই করে।
‘একবছর আগে বগার বিল এলাকার পরিচিত সাগর আমাকে প্রথম ইয়াবা খাওয়ায়। এরপর আমি এলাকার মামুন-ইরফানদের সঙ্গেও ইয়াবা খেয়েছি। একবছরে ১৫ বারের মতো আমি খেয়েছি। তবে ইয়াবা খেয়ে বাসায় গিয়েও আমি কখনো খারাপ আচরণ করিনি। এজন্য কেউ বুঝতে পারেনি। রাকিব-রাশেদরা সবসময় ইয়াবা খায়। সেদিন ঘটনার (অরবিন্দুকে ছুরিকাঘাত) আগেও দু’জন ইয়াবা খায়। পরে আবার আমরা একসাথে ইয়াবা খায়। শুধুমাত্র ইয়াবার টাকার জন্যই আমি তাদের সঙ্গে মিলে ছিনতাই করেছি।’
গ্রেফতার রাকিবের বিষয়ে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা বলেন, ‘রাকিবও মাদকাসক্ত। দিনে তার অন্তত ৬টি ইয়াবা লাগে বলে আমাদের জানিয়েছে। ইয়াবার টাকা জোগাতে গত একবছর ধরে সে চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িয়েছে। একবছর আগে সকালে প্যারেড কর্ণারে প্রাতঃভ্রমণে যাওয়া এক লোকের মোবাইল চুরির পর তার গণধোলাই দেওয়া হয়েছিল। এরপর সে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। কিন্তু মাদকাসক্ত হওয়ায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। রাকিব ও নীপা এতটাই আসক্ত যে, গত দুইদিনে আশপাশের এলাকায় চারটি ছিনতাই ও দুটি ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটায়। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য না হলে কোনো ছিনতাইকারী একই এলাকায় একাধিক ছিনতাই করে না। অরবিন্দু দত্তকে এমনভাবে বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, আরেকটু হলে ফুসফুসে আঘাত লেগে তার মৃত্যু হত। রাজুকে এলোপাতাড়িভাবে সাতটি ছুরিকাঘাত করেছে রাকিব।’
রাকিব-নীপার সহযোগী রাশেদকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানিয়েছেন নোবেল চাকমা।
গ্রেফতার অভিযানে অংশ নেওয়া কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোমিনুল হাসান বলেন, ‘রাকিব ও নীপা প্রেমিক-প্রেমিকার বেশে থাকে। রাশেদ অটোরিকশা চালকের পাশে বসে রাকিবের বন্ধুর মতো করে। এরপর নগরীর বিভিন্ন নির্জন এলাকায় বয়স্ক কিংবা কিশোর বয়সী কাউকে একা পেলে অটোরিকশা থামিয়ে মোবাইল ছিনতাই করে। কেউ যদি সহজে মোবাইল না দেয় তাহলে তাকে ছুরিকাঘাত করে। কখনও আবার মেয়েটিকে দিয়ে ধাক্কা লাগানোর মতো করে পথচারীর সঙ্গে ঝগড়া বাধায়। এরপর সুযোগ বুঝে মোবাইল ছিনতাই করে নেয়।’
এদিকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে এক দম্পতি, ৫ কিশোরসহ আরও ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে নগরীর কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
গ্রেফতার ১০ জন হল- মো. রুবেল (২৮) ও তার স্ত্রী ফারজানা বেগম (২৬), মো. রাজু (২৩), আলামিন (২৮) ও আব্দুল নাইম (২০) এবং পাঁচজন বিভিন্ন বয়সী কিশোর।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেফতার ১০ জনের মধ্যে রুবেল-ফারজানাসহ পাঁচজন এক গ্রুপের এবং কিশোর পাঁচজন আরেক গ্রুপের। রুবেল-ফারজানা এরা কখনো প্রেমিক-প্রেমিকার বেশে, কখনো বন্ধুর বেশে নগরীর বিভিন্ন নির্জন এলাকায় অবস্থান নেয়। সুযোগ বুঝে একাকী কাউকে পেলে ছুরি ধরে মোবাইল ছিনতাই করে। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা ২৪টি মোবাইল সেট, দুটি ছোরা এবং তিনটি কাটার উদ্ধার করা হয়েছে।’
স্টাফ রিপোর্টার : : নতুন করে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না। সলিমপুরে পাহাড় ব্যবস্থাপনার জন্য, কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খ...বিস্তারিত
স্টাফ রিপোর্টার : : হানিফ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুটি সিএনজি অটোরিকশা, মিনিবাস ও মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়...বিস্তারিত
স্টাফ রিপোর্টার : : বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়েছে। ব...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১...বিস্তারিত
খবর বিজ্ঞপ্তি : চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দীঘির পাড়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ৩৮৮তম শাখার উদ্বোধন করা হয়ে...বিস্তারিত
খবর বিজ্ঞপ্তি : বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার ৪০তম বার্ষিক সভা ও নির্বাচিত বেসরকারী মাদ্রা...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited