শিরোনাম
আমাদের ডেস্ক : | ১২:২৫ পিএম, ২০২১-০২-০৯
চৌধুরী মনি/ মোঃ আরফান উদ্দীন :
বাংলাদেশের অন্যতম দ্বীপ হলো কক্সবাজার সোনাদিয়া দ্বীপ। এই দ্বীপের মানুষের বসবাসের ইতিহাস কয়েকশত বছর হলেও এই দ্বীপের মানুষের কাছে পৌঁছেনি মানুষের মৌলিক অধিকার গুলো। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াতসহ কোন প্রকার সেবায় পাচ্ছেন না সোনাদিয়া দ্বীপের সোনার মানুষ গুলো। সমুদ্রে মৎস্য আহরণের কাজ ধরেই এই দ্বীপে কয়েকশত বছর আগে বসতি গড়ে তুলেন বর্তমানে বসবাসরত লোকজনের পূর্বপুরুষগণ। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ভোটাধিকারসহ সব কাজের সাথে যুক্ত থাকলেও তাদের ভাগ্য উন্নয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতো নীরব। সোনাদিয়া দ্বীপকে ঘিরে বাংলাদেশ সম্ভাবনাময়ী একটি পর্যটন শিল্পের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও তার বাস্তবায়নে নেই সংশ্লিষ্টদের কোন উদ্যোগ।
কক্কবাজারের এই দ্বীপে পর্যটকদের কম খরচে আসা যাওয়ার এবং দ্বীপে বসবাসের কোন সুবিধা না থাকলেও প্রতিদিন দেশী বিদেশী হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসু পর্যটক এই দ্বীপ দেখার জন্য ভীড় করছেন। বিশেষ করে দেশপ্রেমিক পর্যটকরা এই দ্বীপের সৌন্দর্য্য এবং রুপ দেখতে দলবেঁধে এই দ্বীপে এসে অস্থায়ী তাবু তৈরি কঠিন কষ্টে রাত্রিযাপন করে এই দ্বীপ ভ্রমণ করছেন বলে ভুক্তভোগী পর্যটকরা জানিয়েছেন।
সোনাদিয়া দ্বীপে কম খরচে যেতে চাইলে, মহেশখালীর গোরকঘাটা হয়ে কুতুবজুম এলাকা দিয়ে যাত্রীবাহি গাড়ীতে করে ঘটিভাঙ্গা ব্রিজ পৌঁছাতে হবে। ঘটিভাঙ্গা ব্রিজ থেকে ইঞ্জিন চালিত বোটে করে সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিম পাড়া অথবা মকচর পৌঁছাতে হবে। যেসকল পর্যটক মকচরে যেতে চান, তাদেরকে মকচরের বোটে করে মকচর পৌঁছাতে হবে ঘটিভাঙ্গা ব্রিজ থেকে। একই ভাবে ঘটিভাঙ্গা ব্রিজের ঘাট থেকে পর্যটকরা বোটে করে কম সময়ে সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিমপাড়া ঘাটে পৌঁছাতে পারেন। তবে পশ্চিম পাড়া ঘাটে যাতায়াত করতে হবে ভরা জোয়ারের সময়। মকচর দিয়ে সোনাদিয়া দ্বীপে যাতায়াতে সাগরে জোয়ার - ভাটা থাকলেও তেমন কোন সমস্যা হয়না। তাই বেশীর ভাগ পর্যটক মকচর হয়েই সোনাদিয়া দ্বীপে যাতায়াত করেন।
এছাড়া মকচরে রয়েছে জেলেদের অবাধ বিচরণ। মকচরে রয়েছে শতাধিক শুটকী আড়ত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শুটকী প্রেমিক পর্যটকরা সোনাদিয়া দ্বীপে ভ্রমণ করে আসার সময় নানা জাতের, নানা স্বাদের শুটকী কিনে নিয়ে আসেন কম দামে। সোনাদিয়া দ্বীপের বাসিন্দা ও মৎস্যজীবীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, সাগরে মাছ ধরার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিধিনিষেধ জারী করায় যে কোন জেলে সাগরে গিয়ে মাছ ধরতে পারছেন না। সুতার জাল নিয়ে গেলেও মৎস্য অধিদপ্তর এবং কোস্টগার্ড জালের আকার সহ বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি খুঁজে দ্বীপবাসীর মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করছেন। আইনকানুন মেনে মাছ ধরার মতো সুযোগ নেই দ্বীপবাসির। তাই সোনাদিয়া দ্বীপে যে লক্ষ্যে লোকজন বসতি স্থাপন করে তাদের প্রজন্ম রেখে গেছেন, তার সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব প্রজন্ম। মাছ ধরার উপর কড়াকড়ি থাকায় সোনাদিয়া দ্বীপের শত শত পরিবার তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দ্বীপবাসী সরকারী বিধিনিষেধ মেনে অধিক ব্যয় করে মাছ ধরার জাল তৈরি ও বোট তৈরি করতে না পারায় গত দুই দশকে তাদের অনেকে মাছ ধরার মতো পূর্ব পুরুষদের শিখানো কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের বাপ দাদার হাতে শেখা মাছ ধরার কাজ ছাড়া এদের কোন প্রকারের কাজ জানা না থাকায় অনেকটা বেকারত্ব জীবনে দুঃখ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন দ্বীপের কয়েকশত পরিবার।
সোনাদিয়া দ্বীপের মৎস্যজীবি সিরাজ মিয়া জানান, সাগরে মাছ ধরায় বিধিনিষেধ করে দেয়ায় সোনাদিয়া দ্বীপের মানুষও নিয়মিত মাছ খেতে পারছেন না। দেশে মাছের চাহিদা যা রয়েছে, উৎপাদন ও আহরণ কম হওয়ায় দেশের প্রতিটি বাজারে মাছের দাম বেশ চড়া। সোনাদিয় দ্বীপজুড়ে একসময় এখানকার বাসিন্দা এবং জেলেরা মাছের চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর মাছ শুকিয়ে শুটকী তৈরি করতেন। মাছ না থাকায় সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিম পাড়ার বিশাল এলাকায় নেই কোন ধরনের শুটকী তৈরির কার্যক্রম। দ্বীপের মকচর এলাকায় শুটকী তৈরির কাজ চালু রয়েছে।
সোনাদিয়া দ্বীপে এখনো গড়ে উঠেনি যাতায়াত ব্যবস্থা। নেই কোন রাস্তা। বালুচর দিয়েই দ্বীপবাসি যার যেমনি ভাবে পথ চলে একস্থান হতে অন্যস্থানে যাতায়াত করছেন। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি হতে চললেও সোনাদিয়া দ্বীপে রাস্তা না থাকায় দ্বীপে বসবাসরত শত শত পরিবার যাতায়াত ব্যবস্থা থেকে দূরে রয়েছেন। সোনাদিয়া দ্বীপে নেই কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নেই মাদ্রাসাও। সমাজবদ্ধ পরিবার গুলো নিজ উদ্যোগে নিজের পাড়ায় মকতব(ফোরকআনিয়া) চালু করে তাদের শিশু- কিশোরদের ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে আসছেন। একই সাথে নামাজ আদায়ের জন্য চালু রেখেছেন ছোট পরিসরে মসজিদ। মসজিদ ও ফোরকানিয়া চালুর ইতিহাস শতাধিক বছরের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এই দ্বীপে বসবাসকারী মানুষগুলো শিক্ষা বঞ্চিত রয়ে গেছেন। দ্বীপের শিশুপুত্র জনি ও শিশুকন্যা সাদিয়ার সাথে কথা বললে তারা জানায়, আমাদের এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে নেই কোন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দ্বীপ থেকে অনেক দূরে কুতুবজুম এলাকায় রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বোটে ঘটিভাঙ্গা এলাকা গিয়ে আবারো গাড়ীতে চড়ে যেতে হয় স্কুলে। এতোদূরের স্কুলে এখান থেকে যাতায়াত কোন ভাবেই সম্ভব হয়না। তাই আমরা পাড়ার ফোরকানিয়ায় নুরানী শিক্ষা নিয়ে কোরআন শরীফ পড়ে দোয়া কালাম শিখি হুজুরের কাছ থেকে। শিশু জনি ও সাদিয়া আনন্দের হাঁসি দিয়ে বলে উঠে আপনারা বড় মানুষ, আমাদের পড়ালেখা শিখানোর জন্য এই দ্বীপে একটি স্কুল খুলে দেন সাহেব। যদি দ্বীপে স্কুল খোলা হয়, আমরা প্রতিদিন স্কুলে যেতে পারবো, শিখতে পারবো পড়ালেখা।
হাটহাজারী প্রতিনিধি : : পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে হাটহাজারীতে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্যায় অত্যাচার জুলুমের বিরদ্ধে আজ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আসুন লাভ বাংলাদেশের পতাকাতলে সেই প্রত...বিস্তারিত
ঢাকা অফিস : : কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটিজের আওতায় জাপানের দেওয়া ৪০ লাখ ৮০০ ডোজ অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা দেশ...বিস্তারিত
মীরসরাই প্রতিনিধি : : মীরসরাইয়ের করেরহাটে চট্টগ্রাম উত্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরীর নির্দেশনায় জ...বিস্তারিত
ঢাকা অফিস : : নির্বাচনে সংঘাত বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন ন...বিস্তারিত
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি : : দ্বিতীয় দফা ইউনিয়ন নির্বাচনে আজ রাঙামাটির ৩টি উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নের ভোট গ্রহন শেষ হয়েছে। সকাল ৮...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited