শিরোনাম
উখিয়া প্রতিনিধি :: | ০১:০১ পিএম, ২০২০-০৯-০৭
অফিসে (ফরমাল সেক্টর) চাকরি করেন এমন ১৩ ভাগ মানুষ করোনায় এ পর্যন্ত কাজ হারিয়েছেন। চাকরি আছে কিন্তু বেতন নেই এমন মানুষের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। আর ২৫ ভাগ চাকরিজীবীর বেতন কমে গেছে। মানুষের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সামাজিক অবক্ষয় ও অস্তিরতা তৈরি হওয়ার আশংকা বিরাজ করছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিআইডিএস-এর এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সরকার এরই মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকলে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাটমন্ত্রী এর আগে পাটকলগুলো বন্ধের কথা বললেও এবার কৌশলে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক বলে এগোচ্ছে বলে পাটকল শ্রমিক নেতারা মনে করছেন।
সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিক চাকরি হারাবেন। পাটকল শ্রমিক আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘করোনা মহামারির মধ্যে সরকারের এই সিদ্ধান্ত চরম অমানবিক।
সরকার স্থায়ী ২৫ হাজার শ্রমিককে স্বেচ্ছা অবসরে পাঠানোর কথা বললেও বাস্তবে একই কারণে অস্থায়ী ও বদলি শ্রমিকদেরও চাকরি থাকবেনা।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের হিসেবে করোনার মধ্যে এখন পর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজার পোশাক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন।
কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার জানান, ‘এখনো শ্রমিক ছাঁটাই চলছে। প্রতিদিনই শ্রমিকরা কাজ হারাচ্ছেন। আগে যাদের চাকরির বয়স এক বছরের কম তাদের ছাঁটাই করা হয়েছে।এখন যাদের চাকরির বয়স বেশি, বেতন বেশি তাদের ছাঁটাই করা হচ্ছে।
বেসরকারি ব্যাংক মালিকরা ছাঁটাই না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে দেয়া নিয়ে কথা বলছেন। তারা বলেছেন, এখন মোট বেতনের ৬৫ ভাগ দেয়া হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর বাঁধার কারণে তা এখনো কার্যকর হয়নি।
ব্যাংকিং খাতে বেতন কমানো কিংবা ছাঁটাই করার মত বিষয় নিয়ে ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সব চিন্তা করা মানে ব্যাংকিং সেক্টর ধ্বংস করা, ব্যাংক একটা দেশের উন্নতির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। তাই ব্যাংকের কর্মি দের অবশ্যই আর্থিক ও মানসিক ভাবে চাপ মুক্ত রেখে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তবেই দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতি হবে।
বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরি আছে, বেতন নেই। যারা এমপিওভুক্ত তারা মোট বেতনের সরকারের দেয়া ৬৫ ভাগ বেতন পাচ্ছেন।
সরকারি চাকরি যারা করেন তাদের বেতন নিয়ে এখনো কোনো সংকট তৈরি হয়নি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একটি অংশ এখনো কর্মচারীদের বেতন দিলেও কত দিন তা দিতে পারবে অনিশ্চিত।
বর্তমানে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে প্রায় ৪৯ লাখ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে৷ বিআইডিএস-এর গবেষণা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ তা বেড়ে প্রায় ৯১ লাখে দাড়াবে৷ এর মধ্যে দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন হবে ৫০ লাখ ২৭ হাজার৷ কর্মসংস্থানের সুযোগ ১০ খাতে
টেক্সটাইল বা বস্ত্র খাতে ৩০ লাখ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে বর্তমানে৷
আগামী পাঁচ বছরে যা ৫৭ লাখে ঠেকবে৷ প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক লাগবে ২০৫০ সালে৷ কর্মসংস্থানের সুযোগ ১০ খাতে
বাংলাদেশের কৃষি-খাদ্য খাতে এখন প্রায় ২৪ লাখ শ্রমিকের চাহিদা৷ ২০২৫ সালে যা বেড়ে ৪৪ লাখে পৌছাবে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ এই খাতে এক কোটি ১৬ লাখ কর্মী লাগবে৷ কর্মসংস্থানের সুযোগ ১০ খাতে
নির্মাণ খাতে ২০১৮ সালে প্রায় ৩৭ লাখ শ্রমিকের চাহিদা ছিল৷ যা ক্রমশ বেড়ে ৬৭ লাখে পৌছাবে ২০২৫ সাল নাগাদ৷ সেখানে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে ১৫ লাখ ৪০ হাজার৷ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে অদক্ষ, দক্ষ, আধাদক্ষ মিলিয়ে এই খাতে মোট এক কোটি ৭৬ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে৷
২০২০ সালের জন্য হালকা প্রকৌশল পণ্যকে ‘বর্ষপণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার৷ বর্তমানে এই খাতে প্রায় ছয় লাখ শ্রমিক রয়েছে৷ ২০২৫ সাল নাগাদ সেখানে শ্রমিকের চাহিদা আরো চার লাখ বাড়বে৷ যার মধ্যে ৮০ ভাগই দক্ষ হতে হবে৷ সব মিলিয়ে ২০৫০ সালে হালকা প্রকৌশলে দুই কোটি ৬৯ লাখ কর্মী প্রয়োজন হবে৷
স্বাস্থ্য ২০১৮ সালে স্বাস্থ্য বা চিকিৎসা সেবায় কর্মীর চাহিদা ছিল ১০ লাখ৷ যা ১৯ লাখে পৌছাবে ২০২৫ সালে৷ ২০৫০ সাল নাগাদ স্বাস্থ্যসেবা অর্ধকোটির বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের যোগান দিতে পারে৷
তথ্য প্রযুক্তি খাতে বর্তমানে কর্মীর চাহিদা প্রায় দুই লাখ৷ ২০২৫ সালে নাগাদ যা বেড়ে প্রায় চার লাখ হবে৷ ২০৫০ সালে আট লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান হবে এই খাতে৷
জাহাজ নির্মাণ বর্তমানে দেশে জাহাজ নির্মান শিল্পে শ্রমিকের চাহিদা প্রায় ষাট হাজার৷ ২০২৫ সাল নাগাদ তা দুই লাখ ছাড়িয়ে যাবে৷ এর মধ্যে সাড়ে ২১ হাজার দক্ষ, সাড়ে ৯৭ হাজার আধাদক্ষ আর এক লাখ ১৭ হাজার অদক্ষ কর্মী লাগবে৷
চামড়া শিল্প এই শিল্পে এখন প্রায় এক লাখ আঠারো হাজার কর্মীর চাহিদা রয়েছে৷ ২০২৫ সালে তা বেড়ে দুই লাখ আট হাজার হবে৷ প্রয়োজন হবে ১৭ হাজার দক্ষ, ১৬ হাজার নয়শো আধাদক্ষ আর এক লাখ ৭৩ হাজার দক্ষ শ্রমিক৷
পর্যটন বর্তমানে হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম খাতে ৪০ হাজার কর্মসংস্থানের চাহিদা রয়েছে৷ এটি বেড়ে সত্তর হাজার হবে ২০২৫ এ৷ ২০৫০ সাল নাগাদ এক কোটি ৮০ হাজার মানুষের কাজের যোগান দিতে পারবে পর্যটন শিল্প৷
অনলাইনে ৫ মে থেকে ২৯ মে পর্যন্ত ২৯ হাজার ৯০৯ জনের ওপর একটি জরিপ চালায় বিআইডিএস। জরিপে অংশ নেয়া ১৩ শতাংশ মানুষ, যারা ফরমাল সেক্টরে কাজ করতেন, তারা চাকরি হারিয়েছেন বলে জানান। যাদের আয় ১১ হাজার টাকার কম তাদের ৫৬.৮৯ শতাংশ পরিবারের আয় বন্ধ হয়ে গেছে, ৩২.১২ শতাংশের আয় কমে গেছে। যাদের আয় ১৫ হাজার টাকার মধ্যে তাদের ২৩.২ শতাংশের আয় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ৪৭.২৬ শতাংশের আয় কমে গেছে। আর যাদের আয় ৩০ হাজার টাকার বেশি তাদের ৩৯.৪ শতাংশের কমেছে এবং ৬.৪৬ শতাংশের আয় বন্ধ হয়ে গেছে।
এই সময়ে এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন। কমপক্ষে মাধ্যমিক পাস এমন নাগরিকদের ওপর এই জরিপ করা হয়। জরিপে অংশ নেয়া পুরুষ ও নারীর অনুপাত ৬৭:৩৩। চাকরি আছে বেতন নেই
১৩ ভাগ মানুষ যারা চাকরি হারিয়েছেন তারা প্রতিমাসে নিয়মিত বেতন পেতেন। তারা দিনমজুর বা অনানুষ্ঠানিক কোনো কাজের সাথে জড়িত নন। আর আনুষ্ঠানিক খাতে চাকরি আছে কিন্তু বেতন পাচ্ছেন না এরকম কর্মজীবীর সংখ্যা অনেক। ২৫ ভাগের বেতন ৫০ থেকে ৩৫ ভাগ কমানো হয়েছে। ব্র্যাকের এক চলতি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, চাকরি আছে বেতন নেই এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বাড়ছে। তারা শহরে টিকতে না পেরে দলে দলে গ্রামে চলে যাচ্ছেন।
যেসব মানুষ চট্রগ্রাম ও ঢাকায় বসাবাসে অভ্যস্ত ছিলো তারাই সংসার চালাতে হিমসিম খেয়ে গ্রামের পথে এখন, এমন একজনের সাথে কথা হয় - জাহিদুল হক চাকরী করতেন চট্রগ্রামের অন্যতম বৃহৎ কনর্ফুলী ইপিজেড (কেইপিজেড) এ প্রোডাকশন ম্যানেজার (পিএম) পদে, করোনা কালীন সময়ে তার চাকরী হারানোর ফলে সন্তানদের লেখাপড়া, বাসা ভাড়া, খাওয়া দাওয়া সহ আনুষাঙ্গিক ব্যায় মিটাতে না পেরে তিনি গ্রামের বাড়ি পটিয়া নাইখাইনে চলে আসে।
এইভাবে হাজারো মানুষ শহরে চাকরী হারিয়ে নিজ নিজ গ্রামে ফিরে এসে মানবেতর জীবন পার করছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা পাঁচ দিনের ছুটির ফাঁদে আটকা পড়েছে দেশ। বুধবারের সরকারি ছুটিকে কেন্দ্র করে এমন পরিস্থিতি তৈর...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় গ্রিডে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়। দুপুর ২টা থেকে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। এ প...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইনে বিভ্রাটের কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ ফিরতে শুরু কর...বিস্তারিত
ঢাকা অফিস : : ২০২৩ সালে বিশ্বে দুর্ভিক্ষ এবং অর্থনৈতিক মন্দা আরও ব্যাপকভাবে দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জান...বিস্তারিত
ঢাকা অফিস : : যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ ...বিস্তারিত
ঢাকা অফিস : : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ক্ষমতাসীন আ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited