শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৭:৫০ পিএম, ২০২১-০১-১২
আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় হেফাজতে আমির মাওলানা জুনাইদ বাবুনগরীসহ অন্তত ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর মধ্যে বাবুনগরী ছাড়া বাকিদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। পিবিআইয়ের চট্টগ্রামের বিশেষ পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি টিম হাটহাজারী ও বাবুনগর বড় মাদ্রাসায় গিয়ে তাদেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জেলা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাজমুল হোসেন বলেন, আমরা এ হত্যা মামলায় ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ১৫ জনের জবানবন্দি নিয়েছি। শাহ আহমদ শফী সাহেবের যে কক্ষ সেটি পরিদর্শন করেছি এবং আলামত সংগ্রহ করেছি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পিবিআই টিম দুঘণ্টা ধরে হাটহাজারী মাদরাসায় অবস্থান করে। এসময় মাদরাসার আশপাশ জুড়ে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাদরাসায় বাবুনগরী, আশরাফ আলী নিজামপুরী, মাদরাসার কর্মকর্তা মো. ইয়াহিয়াসহ অন্তত ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর বাবুনগর মাদরাসায়ও আরও সাত-আট জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের আমীর জুনাইদ বাবুনগরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যা জিজ্ঞেস করেছে, জবাব দিয়েছি। এটা নিয়ে কোনো কথা বলব না। আমাদের বক্তব্য আমরা এর আগেই সংবাদ সম্মেলনে দিয়েছি। তদন্তের স্বার্থে আগামীতেও যদি তারা আসেন, আমরা মেহমানদারি করব।’
২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমীর শাহ আহমদ শফীর জীবনাবসান হয়। তিনি হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার মহাপরিচালক ছিলেন। মৃত্যুর আগে ওই মাদরাসায় তিনদিন ধরে তাকে অবরুদ্ধ করে ছাত্র বিক্ষোভ হয়। এর মধ্যে শফী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হয়। হেলিকপ্টারে ঢাকায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর শফীর পরিবার এবং হেফাজতে ইসলামের মধ্যে তার অনুসারীরা শফীকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এজন্য তারা বাবুনগরী ও তার অনুসারীদের দায়ী করেন।
এরপর ১৭ ডিসেম্বর সকালে আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বাদী হয়ে তৃতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিপলু কুমার দে’র আদালতে একটি মামলা করেন। মামলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসা মামুনুল হকসহ ৩৬ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলা গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছিলেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব নাছির উদ্দিন মুনির ও মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইদ্রিস এবং হাবিব উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, জাকারিয়া নোমান ফয়েজী, নুরুজ্জামান নোমানী, আব্দুল মতিন, মো. শহীদুল্লাহ, মো. রিজওয়ান আরমান, মো. নজরুল ইসলাম, হাসানুজ্জামান, এনামুল হাসান ফারুকী, মীর সাজেদ, জাফর আহমদ, মীর জিয়াউদ্দিন, আহমদ, মাহমুদ, আসাদউল্লাহ, জোবায়ের মাহমুদ, এইচ এম জুনায়েদ, আনোয়ার শাহ, আহমদ কামাল, নাছির উদ্দিন, কামরুল ইসলাম কাসেমী, মোহাম্মদ হাসান, ওবায়দুল্লাহ ওবাইদ, জুবায়ের, মোহাম্মদ, আমিনুল হক, রফিক সোহেল, মোবিনুল হক, নাঈম, হাফেজ সায়েমউল্লাহ ও হাসান জামিল।
মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮০-৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সাক্ষী করা হয়েছে ছয়জনকে।
মামলার আরজিতে অভিযোগ করা হয়েছে, আহমদ শফীর মৃত্যুর আগে ১১ সেপ্টেম্বর বাবুনগর মাদরাসায় মামুনুল হকসহ আসামিরা বৈঠক করেন। সেই বৈঠক থেকে শফীপুত্র আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষা পরিচালক থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। তাকে বহিষ্কার করা না হলে আহমদ শফীকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতায় ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে একদল উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রকে মাঠে নামানো হয়। তারা আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে উগ্র ধর্মীয় ভাষা ব্যবহার করে স্লোগান ও গালিগালাজ করতে থাকে। আহমদ শফীর কার্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করে আসামি নাছির উদ্দিন মুনির ধমকের সুরে বলেন, ‘তুই হচ্ছিস বুড়ো শয়তান, তুই মরবি না, তুই সরকারের দালাল।’ ৪০-৫০ জন শফীর কক্ষে গিয়ে আনাস মাদানীকে বহিষ্কার করে ওই পদে হেফাজতের বর্তমান আমীর জুনাইদ বাবুনগরীকে বসানোর দাবি করতে থাকেন। শফী রাজি না হওয়ায় মামুনুল হকের মোবাইলে নির্দেশমতে নাছির উদ্দিন মুনির তার দিতে তেড়ে যান, শফী বসা অবস্থায় চেয়ারে লাথি মারেন। নাকের অক্সিজেন টান দিয়ে খুলে ফেললে শফী অজ্ঞান হয়ে যান।
ওইদিন বিকেলে শফীকে জিম্মি করে আনাস মাদানীকে বহিষ্কার ও তার পদত্যাগের ঘোষণা মাইকে বলার জন্য চাপ দেন আসামিরা। তিনি অনীহা প্রকাশ করলে তার কক্ষের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিদ্যুতের অভাবে অক্সিজেন লাগাতে না পারায় শফী কোমায় চলে যান। তাকে হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত মাদরাসা থেকে বের করে হাসপাতালে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শফী কোমায় চলে গেছেন। পরের দিন ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরজিতে বলা হয়েছে, ‘আসামি নাছির উদ্দিন মুনির ও মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনায় মাদরাসায় ভাঙচুর করে শাহ আহমদ শফীকে উত্তেজিত করার মাধ্যমে এবং উনাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে না দেওয়ার মাধ্যমে প্রাণে হত্যা করা হয়েছে। মাদরাসা অবৈধভাবে গ্রাস করার জন্য পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববরেণ্য এই ইসলামী চিন্তাাবিদকে হত্যা করেছে।’
স্টাফ রিপোর্টার : : নতুন করে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে না। সলিমপুরে পাহাড় ব্যবস্থাপনার জন্য, কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খ...বিস্তারিত
স্টাফ রিপোর্টার : : হানিফ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুটি সিএনজি অটোরিকশা, মিনিবাস ও মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়...বিস্তারিত
স্টাফ রিপোর্টার : : বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়েছে। ব...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ১...বিস্তারিত
খবর বিজ্ঞপ্তি : চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দীঘির পাড়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ৩৮৮তম শাখার উদ্বোধন করা হয়ে...বিস্তারিত
খবর বিজ্ঞপ্তি : বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার ৪০তম বার্ষিক সভা ও নির্বাচিত বেসরকারী মাদ্রা...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited