শিরোনাম
উখিয়া প্রতিনিধি :: | ০৯:১২ পিএম, ২০২০-০৯-১৫
প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় আইসক্রিম বিক্রেতাদের দেখা যাই, আমরা সকলে স্কুলে পড়াকালীন সময়ে সে সব আইসক্রিম বিক্রেতাগনকে বিভিন্ন ভাবে ডাকা হতো মামা, আংকেল, ভাইয়া বলে!
শৈশবে বিদ্যালয়ের সাথে তারাও আমাদের জীবনের একটা অংশ, বিদ্যালয়ে এসে, টিফিন ছুটি, বিদ্যালয় ছুটির পর বন্ধুদের সাথে মালাই, চিড়া, নারকেল, কুলফী,সে সময়ের জনপ্রিয় বস্তা আইসক্রিম খাওয়া চাই ই চাই। দেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উত্থানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রমবর্ধমান শিল্প হিসেবে বিকশিত হচ্ছিল আইসক্রিম শিল্প। প্রতি বছরই ১৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল এ খাতে। কিন্তু করোনার ধাক্কায় প্রবৃদ্ধি তো দূরের কথা, আইসক্রিম বিক্রির হার প্রায় শূন্যে এসে ঠেকেছে। ফলে করোনার প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আইসক্রিম শিল্প। কিন্তু তুলনামূলক ছোট আকারের শিল্প হওয়ার কারণে নীতিনির্ধারকদের সুনজরে আসেনি এ খাতের সংকট। সরকারের সহযোগিতা না পেলে এ খাতের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি খাতটির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এ খাতের প্রতিষ্ঠানের মতে, আইসক্রিমের ব্যবসা হচ্ছে মৌসুমভিত্তিক। এর মধ্যে এপ্রিল, মে ও জুন এ তিন মাস আইসক্রিমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। এর বাইরে আইসক্রিম বেশি বিক্রি হয় মার্চ, জুলাই ও আগস্টে। ফেব্রুয়ারি, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এ চার মাস অফ-পিক মৌসুম। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শীতকালে আইসক্রিম তেমন একটা বিক্রি হয় না। ৭-১৬ বছর বয়সী ভোক্তাদের মধ্যে আইসক্রিম বেশি জনপ্রিয়। তাছাড়া পুরুষদের চেয়ে নারীরা তুলনামূলক বেশি আইসক্রিম খেয়ে থাকে। ঘুরতে যাওয়া, সিনেমা দেখা, আড্ডার সময় অর্থাৎ ঘরের বাইরে থাকার সময়ে মানুষ বেশি আইসক্রিম খায়। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর আইসক্রিমের নেতিবাচক প্রভাব সংক্রান্ত খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে আইসক্রিম খাওয়ার প্রবণতা একদম কমে যায়। দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর পর মার্চ থেকেই আইসক্রিমের বিক্রি কমতে থাকে। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাস পর্যন্ত সাধারণ ছুটির সময়ে স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র সবকিছুই বন্ধ ছিল। জুন থেকে ধীরে ধীরে সীমিত পরিসরে অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালুর অনুমতি দেয়া হয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো পর্যন্ত বন্ধই রয়েছে। ফলে আইসক্রিমের পিক মৌসুম অর্থাৎ এপ্রিল, মে ও জুনে একেবারেই ব্যবসা হয়নি। এ সময়ে আইসক্রিম উৎপাদনও বন্ধ ছিল। ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে আইসক্রিম উৎপাদন শুরু হয়। সামনে অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আইসক্রিমের অফ-পিক মৌসুম। এতে করোনা ও অফ-পিক মিলিয়ে এ বছর দেশের আইসক্রিম কোম্পানিগুলো মাত্র ৩০ শতাংশের মতো ব্যবসা করতে পেরেছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি সামনের বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভ্যাকসিন চলে এলে ব্যবসায় গতি আসার প্রত্যাশা করছে খাত সংশ্লিষ্টরা।
জিডিপিতে এ খাতের অবদান দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত তিন বছরে আইসক্রিম শিল্পে প্রবৃদ্ধির হার ছিল সবচেয়ে বেশি। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও খাতসংশ্লিষ্টদের তথ্যানুসারে বর্তমানে দেশে ব্র্যান্ডের আইসক্রিমের বাজার রয়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার। এর বাইরে নন-ব্র্যান্ডেড আইসক্রিমেরও বড় বাজার রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, ফাস্টফুড, হোটেলকেন্দ্রিক আমদানীকৃত আইসক্রিমের বাজারও খুব একটা ছোট নয়। ফলে সব মিলিয়ে আইসক্রিমের বাজারের আকার ২ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
আইসক্রিম শিল্পে করোনার প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে অন্যতম ব্র্যান্ড ঈগলুর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জিএম কামরুল হাসান বলেন, করোনার কারণে আইসক্রিম শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠান্ডাজাতীয় খাবার বিশেষ করে আইসক্রিমের সঙ্গে করোনাকে মিলিয়ে অনেক ভিত্তিহীন ও অবৈজ্ঞানিক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। এতে মানুষের আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ফলে বর্তমানে আইসক্রিমের বিক্রি ৩০ শতাংশে নেমে গেছে। এক-দেড় মাস ধরে কিছু আইসক্রিম বিক্রি হচ্ছে, তবে তা যৎসামান্য। বিশ্বের অনেক দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে। আমাদের এখানে এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হলেও একসময় খুলে দিতেই হবে। আইসক্রিম ভোক্তার ৬০ শতাংশই হলো বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে ও করোনার ভ্যাকসিন চলে এলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে আইসক্রিমের বাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমি আশাবাদী।
আরেকটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড বর্তমানে পোলারের মার্কেট শেয়ার ৩৭ শতাংশ। ১৯৮৬ সাল থেকে পরবর্তী এক দশক দেশের আইসক্রিমের বাজারে শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড ছিল পোলার।
বিশ্বখ্যাত গোল্ডেন হার্ভেস্ট আইসক্রিম ও ফ্রোজেন ফুডের সিইও এসএম মোমতাজুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। সাধারণ ছুটির সময়ে কারখানা বন্ধ রাখতে হয়েছে। জুলাই থেকে কারখানা চালু করা হলেও চাহিদা না থাকায় সীমিত পরিসরে উৎপাদন চালাতে হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ শ্রমিক দিয়ে কারখানায় কাজ চলছে। আইসক্রিমের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব কাঁচামালই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ বছরের বাজার চাহিদার কথা চিন্তা করে করোনার আগেই অনেক কাঁচামাল আমদানি করা হয়েছিল। এছাড়া সে সময় যেসব এলসি খোলা হয়, সেগুলোর চালান এখন আসছে। কিন্তু চাহিদা না থাকায় আমরা এসব কাঁচামাল কাজে লাগাতে পারছি না। ফলে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ায় অনেক কাঁচামাল ফেলে দিতে হচ্ছে। নন ব্র্যান্ডের অনেক ফ্যাক্টরি প্রায় ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পটিয়ায় থানা হাটের পাশে অইসক্রিম ফ্যাক্টরী , আবদুর রহমান স্কুলের পাশের আইসক্রিম ফ্যাক্টরী। পটিয়ায় অন্য যে সব ফ্যাক্টরী এখনো চালু আছে সেগুলির অবস্তাও জরাজীর্ণ, কারন নন ব্র্যান্ডের প্রধান বিক্রয়ের জায়গা হল স্কুল কলেজ, বিভিন্ন শপিং মল, যেহেতু করোনার কারনে স্কুল কলেজ বন্ধ সেজন্য তারা তাদের উৎপাদনও আপাতত বন্ধ রেখেছেন । নন ব্র্যান্ডের বেশ কয়েকজন মালিকের সাথে কথা বলে জানা যাই, ব্যাংক সহায়তা সহ স্কুল কলেজ সব কিছু খুলে দিলে তারা আবার ঘুরে দাড়ানোর আপ্রান চেষ্টা করবে।
গুইমারা প্রতিনিধি :: : রাউজানে পুকুরে নেমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোহাম্মদ রামিম (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হ...বিস্তারিত
রামু প্রতিনিধি : : বিসর্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননী...বিস্তারিত
রাউজান প্রতিনিধি : : রাউজানে পুকুরে নেমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মোহাম্মদ রামিম (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হ...বিস্তারিত
মীরসরাই প্রতিনিধি : : মিরসরাই উপজেলায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আগুনে তিনটি বসতঘর পুড়ে গেছে। বুধবার (৫ অক্টোবর) রা...বিস্তারিত
পেকুয়া প্রতিনিধি : কক্সবাজারের পেকুয়ায় কেয়া ডেন্টাল কেয়ারে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। বুধব...বিস্তারিত
সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি : : সীতাকুণ্ডের কুমিরায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। অবস্থা এমন যে একটি গ্রামের ঘরে ঘরে জ্বর। আর এসব জ্বর ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited