শিরোনাম
আমাদের ডেস্ক : | ০৩:২৩ পিএম, ২০২২-০৪-০৯
রোজা রাখা অবস্থায় প্রচণ্ড ক্ষুধা অথবা পিপাসায় কাতর হয়ে প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা হলে এবং বেহুঁশ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে ওই ব্যক্তি রোজা ভেঙে প্রয়োজনমতো পানাহার করতে পারে। তবে ওই রোজা তাকে পরে কাজা করতে হবে। কারণ জান বাঁচানো ফরজ। আর মহান আল্লাহ বলেন, ‘...তোমরা নিজেদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)
অন্য আয়াতে এসেছে, ‘...তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়াশীল। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ২৯)
তবে কোনো ধারণাপ্রসূত কষ্ট, ক্লান্তি অথবা সাধারণ রোগের আশঙ্কায় রোজা ভাঙা বৈধ নয়।
যারা কঠিন পরিশ্রমের কাজ করে তাদের জন্যও রোজা ত্যাগ করা বৈধ নয়। এ শ্রেণির লোকেরা রাতে রোজার নিয়ত করে রোজা রাখবে। অতঃপর দিনের বেলায় কাজের সময় যদি নিশ্চিত হয় যে কাজ ছাড়লে তাদের ক্ষতি এবং কাজ করলে তাদের প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে তাদের জন্য রোজা ভেঙে শুধু ততটুকু পানাহার বৈধ হবে, যতটুকু পানাহার করলে তাদের জান বেঁচে যাবে। অতঃপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত আর পানাহার করবে না। অবশ্য রমজানের পর তারা ওই দিনটি কাজা করে নেবে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহর সাধারণ বিধান হলো, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের অতীত ভার অর্পণ করেন না। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮৬)
অন্য আয়াতে এসেছে, ‘আল্লাহ দ্বিনের ব্যাপারে তোমাদের জন্য কোনো সংকীর্ণতা রাখেননি। ’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৬)
বলা বাহুল্য, উট বা ছাগল-ভেড়ার রাখাল রৌদ্রে বা পিপাসায় যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে যতটুকু পরিমাণ পানাহার করা দরকার ততটুকু করে বাকি দিনটুকু সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিরত থাকবে। অতঃপর রমজান বিদায় নিলে ওই দিনটি কাজা করে নেবে। আর এর জন্য কোনো কাফফারা নেই। (মাজাল্লাতুল বুহুসিল ইসলামিয়্যাহ : ২৪/৬৭, ১০০)
অনুরূপ বিধান চাষি ও মজুরদের। পক্ষান্তরে যাদের প্রাত্যহিক ও চিরস্থায়ী পেশাই হলো কঠিন কাজ। যেমন—পাথর কাটা বা কয়লা ইত্যাদির খনিতে যারা কাজ করে এবং যারা আজীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত, তারা রোজা রাখতে অস্বাভাবিক কষ্ট অনুভব করলে রোজা না রাখতে পারে। তবে তাদের জন্য (তাদের পরিবার দ্বারা) ফিদিয়া আদায় করা জরুরি। অবশ্য এ কাজ সম্ভব না হলে তাও তাদের জন্য মাফ।
পরীক্ষার সময় মেহনতি ছাত্রদের জন্য রোজা কাজা করা বৈধ নয়। কারণ এটা কোনো এমন শরয়ি ওজর নয়, যার জন্য রোজা কাজা করা বৈধ হতে পারে।
দিন যেখানে অস্বাভাবিক লম্বা
যে দেশে দিন অস্বাভাবিকভাবে ২০-২১ ঘণ্টা লম্বা হয়, সে দেশের মানুষের জন্যও রোজা ত্যাগ করা অথবা সূর্যাস্তের আগে ইফতার করা বৈধ নয়। তাদের যখন দিন-রাত হয়, তখন সে অনুসারে তাদের জন্য আমল জরুরি। তাতে দিন লম্বা হোক অথবা ছোট। কেননা ইসলামী শরিয়ত সব দেশের সব মানুষের জন্য ব্যাপক। আর মহান আল্লাহর ঘোষণা হলো—‘আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ পর্যন্ত না (রাতের) কালো অন্ধকার থেকে ফজরের সাদা রেখা তোমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে। অতঃপর তোমরা রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)
কিন্তু যে ব্যক্তি দিন লম্বা হওয়ার কারণে নিদর্শন দেখে, অভিজ্ঞতার ফলে কোনো বিশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মতে, কিংবা নিজের প্রবল ধারণা মতে এটা মনে করে যে এত দীর্ঘ রোজা রাখাতে তার প্রাণ নাশ ঘটবে অথবা বড় রোগ দেখা দেবে, অথবা রোগ বৃদ্ধি পাবে অথবা আরোগ্য লাভে বিলম্ব হবে, ওই ব্যক্তি ততটুকু পরিমাণ পানাহার করবে, যতটুকু পরিমাণ করলে তার জান বেঁচে যাবে অথবা ক্ষতি দূর হয়ে যাবে। অতঃপর রমজান বিদায় নিলে সুবিধামতো যেকোনো মাসে ওই দিনগুলো কাজা করে নেবে।
অনুরূপভাবে রোজা রাখা অবস্থায় হঠাৎ করে মারাত্মক ধরনের অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে রোজা ভেঙে ফেলতে পারবে। কেননা মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘...সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে তারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করে। এবং কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময়ে এই সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না...। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)
যে ব্যক্তি এমন দেশে বসবাস করে, যেখানে গ্রীষ্মকালে সূর্য অস্তই যায় না এবং শীতকালে উদয়ই হয় না অথবা যেখানে ছয় মাস দিন ও ছয় মাস রাত থাকে, ওই ব্যক্তির ওপরও রমজানের রোজা ফরজ। ওই ব্যক্তি নিকটবর্তী এমন কোনো দেশের হিসাব অনুযায়ী রমজান মাসের শুরু ও শেষ, প্রাত্যহিক সাহরির শেষ তথা ফজর উদয় হওয়ার সময় ও ইফতার তথা সূর্যাস্তের সময় নির্ধারণ করবে, যে দেশে রাত দিনের পার্থক্য আছে। অতএব সেখানেও ২৪ ঘণ্টায় দিবারাত্রি নির্ণয় করতে হবে। মহানবী (সা.) কর্তৃক এ কথা প্রমাণিত যে একবার তিনি সাহাবাদের দাজ্জাল প্রসঙ্গে কিছু কথা বললেন। তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘সে কত দিন পৃথিবীতে অবস্থান করবে?’ জবাবে তিনি বলেন, ৪০ দিন—এক দিন এক বছরের সমান, এক দিন এক মাসের সমান এবং এক দিন এক সপ্তাহের সমান। বাকি দিনগুলো তোমাদের স্বাভাবিক দিনের মতো। তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, যে দিনটি এক বছরের মতো হবে, ওই দিনে এক দিনের (পাঁচ ওয়াক্ত) নামাজ পড়লে আদায় হবে কি? তিনি বলেন, ‘না; বরং তোমরা বছর সমান ওই দিনকে স্বাভাবিক দিনের মতো নির্ধারণ করে নিয়ো। ’ (মুসলিম, হাদিস : ২৯৩৭)
অর্থাৎ প্রত্যেক ২৪ ঘণ্টায় শরিয়তের চিহ্ন মতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় নির্ণয় করে নেবে। অনুরূপ রমজানের রোজা নির্ধারণ করতে হবে। কারণ এ দিক থেকে রোজা ও নামাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। (মাজাল্লাতুল বুহুসিল ইসলামিয়্যাহ : ১৪/১২৬)
অনুলিখন : মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ
আমাদের ডেস্ক : : লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান সৌদি আরবের পবিত্র মক্কায় কা’বা তওয়াফের মাধ্যমে হজ কার্যক্রম শুরু করে...বিস্তারিত
ইসলাম ডেস্ক : : মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে সমাজকল্যাণমূলক কাজকে ইবাদত ও সওয়াবের কাজ হিসেবে আখ্যায়ি...বিস্তারিত
ঢাকা অফিস : : চলতি বছরের হজযাত্রীদের বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা (আরটিপিসিআর টেস্ট) করা হবে। গত (১৮ মে) বুধবার ধর্...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : পবিত্র লাইলাতুল কদর আজ বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল)। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে শবে কদরের রজনী। যথাযোগ্য...বিস্তারিত
ঢাকা অফিস : : জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৭৫ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা হারে ১৪৪৩ হিজরি সনের সাদকাতুল ফিতরের হার নির্ধারণ ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল রোববার থেকে মাসব্যাপী সিয়াম সাধ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik amader Chattagram | Developed By Muktodhara Technology Limited