ই-পেপার | রবিবার , ২৮ এপ্রিল, ২০২৪
×

আইআইইউসিতে নবীন বরণ ও বিদায় প্রদান অনুষ্ঠান উদযাপিত

যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে
আমি বাইব না
আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে গো
…………………………
তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে
তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাইবা আমায় ডাকলে

  • কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কত স্বপ্ন নিয়ে এই বিদ্যায়তনে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। চারটি বছরের কঠোর অধ্যবসায় নিয়ে বিদায় নিব ভেবে দিকভ্রান্ত প্রজাপতির মতো কত রঙিন স্মৃতির প্রতি আমাদের মায়া জমে যায়। বিদায়বেলায় তাই এই বিচ্ছেদ বড় আবেগের।

অন্যদিকে নতুন স্বপ্নের সারথি হয়ে যাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আগমন তাদের জন্য বসন্তের সুবাসিত ভোরের আলোতে মন আলোকিত হয়।শ্রাবণ গগন ঘিরে বারি যখন ঘুরে ফিরে, তেমনই একটি দিন ২ আগস্ট, ২০২৩ ইং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম-এর ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অন্তর্ভুক্ত “ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ এন্ড লিটারেরি সোসাইটি”-এলস (মেইল) কর্তৃক আয়োজিত ‘নবীনবরণ উৎসব ও বিদায়ী সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠান আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ১১:৩০টায় অনুষ্ঠান আরম্ভ হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করেন এলস-এর প্রেসিডেন্ট, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ আজিজুল হক স্যার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বিভিন্নমুখী কার্যক্রমে জড়িত হয়ে নিজেদের বিকশিত করার উপর গুরুত্বারোপ করে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের শোভা বৃদ্ধি করেন আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ-এর সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিমেইল একাডেমিক জোনের চেয়ারম্যান মিসেস রিজিয়া রেজা চৌধুরী। বক্তৃতার মধ্যে দিয়ে তিনি সবাইকে জীবনে সফল হওয়ার জন্য উৎসাহ দেন এবং নবীনদের কর্মক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত করেন। এছাড়াও গেস্ট অব হনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সম্মানিত ডীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্যার। তিনি বিদায়ী শিক্ষার্থীদের একটি আদর্শ জীবন গঠনের জন্য উৎসাহিত করেন এবং নবীনদের ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব এবং কর্মজীবনে উচ্চশিক্ষার গুরুত্ব বর্ণনা করেন।

নবীন এবং বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরও অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করেন বিশেষ অতিথি, ইংরেজি বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রক্টর মোহাম্মদ ইফতেখার উদ্দিন স্যার এবং ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু রিসার্চ সেন্টার এন্ড ইন্টার রিলিজিয়াস ডায়ালগের ডিরেক্টর মোহাম্মদ সরওয়ার আলম স্যার।

এছাড়াও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে উপস্থিত ছিলেন, -ডক্টর মোহাম্মদ রিয়াজ মাহমুদ স্যার এসোসিয়েট প্রফেসর -সাজ্জাদুল করিম স্যার এসোসিয়েট প্রফেসর -তাজ উদ্দীন স্যার
এসোসিয়েট প্রফেসর -মোহাম্মদ ইউসুফ উদ্দীন খালেদ স্যার এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও ভাইস প্রেসিডেন্ট, এলস -আবু সালেহ নিজাম উদ্দীন স্যার এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও ট্রেজারার, এলস -আবসার উদ্দীন স্যার এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর -মো: মোরশেদুল আলম স্যার এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর – আমির মোহাম্মদ খান স্যার, এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সহ প্রমুখ।

সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের বক্তৃতা শেষে বক্তব্য রাখেন বিদায়ী ব্যাচের এজিএস এবং সিআর হাসনাত তানভীর। শিক্ষকদের সাথে তার অতুলনীয় সব স্মৃতি এবং তাদের শেখানো জীবনের পাঠ এবং উপাখ্যান তুলে ধরেন তিনি।অনুষ্ঠানের পরবর্তী সময়ে মধুর কন্ঠে তিনি গেয়ে উঠেন ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে’। এলস ক্লাবের প্রাক্তন জিএস নুর মুহাম্মদ হাসান তার সাবলীল ও চমৎকার কন্ঠে তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, ইংরেজি বিভাগে তার পথচলা এবং ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। প্রাক্তন এজিএস সাকিব আসিফ সবার সামনে তার ভার্সিটি জীবনের স্মৃতিচারণ করেন এবং নবীনদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করেন। এরপর এলস-এর পক্ষ থেকে গ্র্যাজুয়েটদের ক্রেস্ট এবং সার্টিফিকেট দিয়ে সম্মানিত করা হয়। তার পর পরই প্রাক্তন এলস কমিটি কর্তৃক আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়।

বক্তৃতা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। যার আয়োজনে ছিলেন ফজলুল করিম বাবু, এজিএস এবং মুহাম্মদ তানভীর হোসেন অয়ন, সহকারী সাংস্কৃতিক সম্পাদক। তারা সম্মানিত শিক্ষক এবং বিদায়ী ভাইদের নিয়ে একটি মজার খেলার আয়োজন করেন যার নাম ‘ঈযড়ড়ংব ঃযব চবৎংড়হ’। এই সময় খুব আনন্দঘন একটি পরিবেশ তৈরি হয় এবং মনে হয় যেন আমরা সবাই ফিরে গিয়েছি আমাদের চিরাচরিত ক্লাসরুমে যেখানে স্যারদের প্রাণবন্ত হাসি ও আমাদের আনন্দের এক বাঁধভাঙা ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে।

এলস ক্লাবের ডিবেট সেক্রেটারি মোঃ নিয়াজ মোর্শেদ খানের গাওয়া ‘পুরানো সে দিনের কথা’ গানটি এমন এক আবেগময় পরিবেশ তৈরি করে যেখানে তারা স্মৃতির গহীনে ডুব দিয়ে সাঁতার কেটে বেড়াতে থাকে দীর্ঘ চার বছরের বর্ণিল স্মৃতিরমেলায়। এরপর আমাদের শ্রদ্ধেয় সাজ্জাদুল করিম স্যারের লেখা ‘আমার ছোট্ট রাজকুমারী’ শিরোনামের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন সুবর্ণ বড়ুয়া, সহকারী প্রকাশনা সম্পাদক।

তারপরে এলস কমিটির নবনিযুক্ত জিএস নুরুল আজম বিদায়ী সিনিয়রদের প্রতি তার ভালবাসা এবং শ্রদ্ধা প্রকাশ করে তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা প্রদান করেন এবং নতুনদের অনুপ্রেরণা দেন এবং ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য উৎসাহিত করেন।

পুরো অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন আশরাফ-উর-জামান এবং মো: নিয়াজ মোরশেদ খান। ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারারি সোসাইটির সকল সম্পাদকবৃন্দ এবং তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সহযোগিতা অনুষ্ঠানটি রঙিন ও বর্ণিল হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানের সভাপতি ডক্টর মুহাম্মদ আজিজুল হক স্যার তাঁর নিজের কন্ঠে বিখ্যাত শিল্পী হাসন রাজার একটি হৃদয়গ্রাহী গানের সুরে উৎসবমুখর এই অনুষ্ঠানের ইতি টানেন।