ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২ মে, ২০২৪
×

চট্টগ্রামের দুঃখ জলাবদ্ধতা, উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির ক্ষোভ প্রকাশ

উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়হীনতা ও প্রকল্প বাস্তবায়নে ,দীর্ঘসূত্রিতা জলাবদ্ধতা নিরসনে অন্যতম অন্তরায়

বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির স্থায়ী পরিষদের সভাপতি জসিম উদদীন চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন-চট্টগ্রামের দুঃখ জলাবদ্ধতা সমস্যা থেকে চট্টগ্রামবাসী কোনভাবেই পরিত্রান পাচ্ছে না। বিগত ২ দিনের ভারী বর্ষনে পুরো নগরী আগের সেই চিরচেনা রূপেই দৃশ্যমান। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে গোটা নগরী। চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রাম এর ফলশ্রুতিতে সরকারের পক্ষ থেকে এতদসংক্রান্ত মেগা প্রকল্প বরাদ্দ পেলেও তা অদ্যাবধি সেই তিমিরেই রয়ে গেছে।

প্রকল্প কাজে ধীরগতি, কার্যাদেশের নির্দিষ্ট মেয়াদে কার্য সম্পন্ন না হওয়া ইত্যাকার কারণে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে। উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়হীনতা ও প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা জলাবদ্ধতা নিরসনে অন্যতম অন্তরায় বলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন-কর্ণফুলি নদীর নাব্যতা রক্ষায় নিয়মিত ড্রেজিং এর আবশ্যকীয়তা থাকলেও বরাবরই তা উপেক্ষিত। নদীর অবৈধ দখল ও দুষনমুক্ত করতে নেই কোন কার্যকর উদ্যোগ-আয়োজন। প্রকল্প কাজে বিভিন্ন খালের মুখে স্লুইস গেইট নির্মান করতে গিয়ে খালের মুখ সংকোচিত হয়ে গেছে। আবার তলা ভরাট করতে গিয়ে খােেলর গভীরতা হ্রাস করা হয়েছে। উপরন্তু পানি চলাচলের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নিয়মিত খাল পরিস্কার না করাতে সামান্য বৃষ্টিতেও নগরী কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলোর যথার্থ বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠনেরও দাবি করেন তিনি। কার্যকরি পরিষদের সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম বলেন-সম্প্রতি চট্টগ্রাম সহ সারাদেশে ডেঙ্গু এক মহামারি আকার ধারণ করেছে।

ডেঙ্গুর অবাঞ্ছিত শিকার হয়ে ইতোমধ্যে অসংখ্য মানুষের প্রাণসংহার ঘটেছে। সর্বত্র ডেঙ্গুর জীবানু বহনকারী মশার আশংকাজনক বিস্তার ঘটেছে। যা থেকে চট্টগ্রামও বাদ যায়নি। চট্টগ্রামের একাধিক স্থানে ডেঙ্গুর লাভার খোঁজ মিলেছে। তাই নগরীসহ চট্টগ্রামকে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে সুরক্ষায় কার্যকর ও বলিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। স্থায়ী পরিষদের সহ সভাপতি এস এম নুরুল হক বলেন- চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে এসেছেন।

তিনি চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে কোনরূপ কার্পন্যতা করেননি। তাঁকে চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে আরও বলেন- শতবর্ষী কালুর ঘাট রেল কাম-সড়ক সেতু প্রকল্পটি ইতোপূর্বে দুই দুই বার একনেকে পাস হয়েছে। অথচ কোন অদৃশ্য কালো হাতের ইশারায় প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখছে না তা বোধগম্য নয়। তাই চট্টগ্রামের কালুরঘাট উভয় পাড়ের বাসিন্দাদের ভোগান্তি লাঘবে
অবিলম্বে কালুর ঘাট রেল কাম সড়ক সেতু নির্মান করার জন্য জোর দাবি জানান।

মহাসচিব আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শাকুর বলেন- অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ জনদুর্ভোগ বাড়াবে। উল্লেখ্য যে, চট্টগ্রাম সিটি হবে “ওয়ান সিটি টু টাউন”। অথচ ট্যানেল হতে বের হয়ে মহেশখালী মাতার বাড়ি, কক্সবাজার সংযোগ সড়কের কাজ এখনও দৃশ্যমান নয়। সাগর পাড় হয়ে কক্সবাজার টেকনাফ রিং রোড পর্যন্ত রিং রোডের বাস্তবতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

এয়ারপোর্ট হতে লালখান বাজার পর্যন্ত নির্মানাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মান কাজ সমাপ্ত হতে চললেও অদ্যাবধি আগ্রাবাদ বাদামতলী, স্ট্রান্ড রোড, রশিদ বিল্ডিং মুখী, নিমতলা পোর্ট কানেক্টিং রোড, বন্দর ইপিজেড ও নারিকেল তলা সিমেন্ট ক্রসিং উঠানামার রেম্পের কাজ এখনো নজরে আসছে না। আর যদি এসব রেম্প বাদ দিয়ে এক্সপ্রেস ওয়ের কাজ সমাপ্ত হয় তাহলে নগরবাসীর ভোগান্তির অন্ত থাকবে না। অদ্য ৬ আগস্ট রবিবার বিকাল ৪ টায় বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির স্থায়ী পরিষদের এক সভা স্থায়ী পরিষদের সভাপতি জসিম উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দৈনিক পূর্বকোণ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কার্য নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ডাক্তার শেখ শফিউল আজম, স্থায়ী পরিষদের সহ সভাপতি এস এম নুরুল হক, মহাসচিব আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শাকুর, লায়ন মুহাম্মদ নুরুল আলম উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ ইব্রাহিম, এডভোকেট ফয়েজুর রহমান বেলাল, হায়দার হোসেন বাদল, ডাক্তার হানিফ খান জিলানী প্রমুখ।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত রিপোর্ট