ই-পেপার | শুক্রবার , ৩ মে, ২০২৪
×

অবৈধ সম্পদের মামলায় ডিআইজি মিজানের ১৪ বছর সাজা

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে তার ভাই মাহবুবুর রহমান, ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান এবং স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্নাকে দেওয়া হয়েছে সাত বছর করে কারাদণ্ড। ঢাকার ষষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

আসামিদের মধ্যে রত্না ও মাহবুবুর পলাতক। কারাগারে থাকা মিজানকে রায়ের সময় আদালতে হাজির করা হয়। আর জামিনে থাকা মাহমুদুল আদালতে হাজির হন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি লড়েন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। মিজানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। আর মাহমুদুলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম।তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৪ জুন মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি মিজানুর রহমান তার ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে ২৪ লাখ ২১ হাজার ২২৫ টাকায় শুলশান-১ এর পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে ২১১ বর্গফুট আয়তনের একটি দোকান বরাদ্দ নেয়।মিজানুর রহমান নিজে নমিনি হয়ে তার ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর একটি ব্যাংকে এফডিআর অ্যাকাউন্ট করে ৩০ লাখ টাকা জমা করেন।

তবে দুদক অনুসন্ধান শুরু করলে সে টাকা ভাঙ্গিয়ে সুদে আসলে ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫৭ টাকা তুলে ফেলেন। অভিযোগে বলা হয়, মিজানুর রহমান তার স্ত্রী রত্না কাকরাইলে ১৭৭৬ বর্গফুটের একটি বাণিজ্যিক ফ্ল্যাট ক্রয়ে ২০১১ সালে চুক্তিনামা করে বিভিন্ন সময় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৫০ টাকা নির্মাণ কোম্পানিকে পরিশোধ করেন। পরে ২০১৬ সালে ফ্ল্যাটটি ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানের নামে দলিল রেজিস্ট্রি করেন।

তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে ওই বছর ২০ অক্টোবর ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আসিফুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ৩৩ সাক্ষীর মধ্যে ২৭ জনের সাক্ষ্য শুনেছেন বিচারক।দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ৫ জুন এ মামলা রায়ের পর্যায়ে আসে।

এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানুর রহমানকে। তার বিরুদ্ধে বৈধ সম্পদের অনুসন্ধান চলার মধ্যেই দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই আরেকটি মামলা হয়। ওই মামলায় মিজান-বাছির দুইজনই আসামি। ঘুষকাণ্ডের পর এনামুল বাছিরও সাময়িক বরখাস্ত হন। ঘুষের মামলায় ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মিজানের ৩ বছরের এবং বাছিরের ৮ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।