ই-পেপার | শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
×

‘ভুক্তভোগীরা দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দীনের ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার’

আলোচিত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চাকরিচ্যুত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার হয়েছে। তার হয়রানি, নির্যাতন এবং সাম্প্রতিক সময়ে মিথ্যাচারে প্রতিবাদে প্রেস ব্রিফিং করেছে ভুক্তভোগীরা। বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায়, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এই প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক জিএম ইঞ্জিনিয়ার মো. সারওয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক চাকরিচ্যুত দুদকের উপ সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় নিজেকে একজন সৎ কর্মকর্তা দাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় প্রভাবশালী মহলের চাপে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। একইসঙ্গে চাকরিচ্যুত হওয়ার কারণে ভাইয়ের দোকানে ক্যাশিয়ার হিসেবে চাকরি করছেন- উল্লেখ করে সহানুভূতি আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। এরই মাধ্যমে আবার দুদকে চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য আকুতিও জানাচ্ছেন।

‘কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের জিএম থাকাকালে (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) আমার ওপর ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি অত্যাচার, নির্যাতন ও জুলুম করেছেন। তার শাশুড়ির নামে থাকা অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় চরম আক্রোশের বশীভূত হয়ে শরীফ আমাকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে। দুই মাসেরও বেশি সময় কারাগারে মানবেতর জীবন কাটাতে হয়েছে আমাকে। পাশাপাশি আমার সামাজিক ও পারিবারিক জীবন শরীফের জন্য দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তাই শরীফের আসলরূপ উন্মোচনের জন্যই একজন ভুক্তভোগী ও নির্যাতিত হিসেবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি’।

তিনি আরো বলেন, শরীফ আমাকে জড়িয়ে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) সম্পর্কে মিথ্যাচার করে চলেছেন। নিজের দুর্নীতি ও অপকর্ম ধামাচাপা দিয়ে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করার অপচেষ্টা করছেন। তার এ সমস্ত কর্মকাণ্ডে আমার এবং কেজিডিসিএল এর সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ জনগণও বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

কেজিডিসিএল এর গ্রাহক নূরজাহান বেগম এর আবেদনের আলোকে ও আমার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে আবাসিক গ্রাহকের ১২টি দ্বৈত চুলা চান্দগাঁওস্থ তার নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরের অনুমোদন দেই। চূড়ান্ত পর্যায়ে বিক্রয় (উত্তর) বিভাগ কর্তৃক ১২টি দ্বৈত চুলা আরেকজন গ্রাহকের নামে নতুন সংযোগ এর চাহিদাপত্র প্রদান করলে গ্রাহক ডিমান্ড নোটের টাকা পরিশোধ করেন। এরপর ওই গ্রাহককে সংযোগ প্রদান করা হয়। উক্ত ১২টি দ্বৈত চুলার মাসিক গ্যাস বিল গ্রাহক নিয়মিত পরিশোধ করেন। এতে কেজিডিসিএল কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং রাষ্ট্রও কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। কোনও নাগরিককেও তার সুবিধা থেকে বে-আইনীভাবে বঞ্চিত করা হয়নি।

অথচ এ বিষয়ে আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে গ্রেফতারের পর মামলা দায়ের করেন শরীফ। যেখানে কেজিডিসিএল এর কর্মকর্তা হিসেবে জিএম ও ডিজিএমকে আসামি করা হয়। অথচ এখানে যদি কাউকে আসামি করতে হয় কিংবা ওই সংযোগে যদি কোনও বেআইনি কিছু হয়ে থাকে তবে তাতে প্রথমে নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তা অর্থাৎ সহ-ব্যবস্থাপক/সহকারী প্রকৌশলী, উপ-ব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপক আসামি হওয়ার কথা। এতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, ব্যক্তিগত হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য শরীফ আমার বিরুদ্ধে এ হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক টেকনিশিয়ান মো. দিদারুল আলম, ব্যবসায়ী হাজী দেওয়ান ও ফজলুল হক।