ই-পেপার | সোমবার , ৬ মে, ২০২৪
×

আল্লামা তাহের শাহ’র নেতৃত্বে চট্টগ্রামে জুলুসে লাখো মানুষের ঢল

আমাদের ডেস্ক
পবিত্র ইদে মিলাদুন্নবী পালন ও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস লাখো মানুষের অংশগ্রহণে আরম্ভ হয়েছে। ৫১তম এবারের জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাকিস্তানের ‘দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরিফে’র হুজুর কেবলা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জুলুস র‍্যালি শুরুর আগে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরস্থ আলমগীর খানকাহ-এ কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়বিয়ায় সাংবাদিকদের নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এ সময় দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

সাথে আরও আছেন সাজ্জাদানশিন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ) ও শাহজাদা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মজিআ)। তাকবির, হামদ, নাতে রাসুল, গজল, জিকিরে জিকিরে মুখরিত হয়ে ওঠেছে পুরো চট্টগ্রাম শহর।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর (স.) ও জশনে জুলুসে অংশ নিতে ভোর থেকে চট্টগ্রাম ও আশপাশের জেলার ভক্তরা আসতে থাকেন খতিবের হাটস্থ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে। দেখতে দেখতে কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। জামেয়ার বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্র, গাউসিয়া কমিটির বিভিন্ন শাখার কর্মীরা এই ইদের খুশিতে মেতে ওঠেন। একই ডিজাইনের পাঞ্জাবি, টুপি, পাগড়ি ও হাতে আঞ্জুমানের পতাকা নজর কাড়ে সবার।

এ জুলুসকে কেন্দ্র করে নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দৃষ্টিনন্দন তোরণ, গোলচত্বর, সড়ক বিভাজককে জুলুসের পতাকা, বর্ণিল আলোকসজ্জা, ব্যানার, ফেস্টুনে চিত্তাকর্ষণ রূপে তৈরি হয়েছে।

জুলুসের রোড ম্যাপ বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার অলিখাঁ মসজিদ, প্যারেড মাঠের পশ্চিম পাশ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারি, খাস্তগীর স্কুল, আসকার দীঘি, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেট ঘুরে জামেয়া মাদ্রাসা মাঠে মাহফিলে আসবে। জোহর নামাজের পর দোয়া ও মোনাজাত হবে।

আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, জশনে জুলুস এখন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। মানুষ চায় জুলুস বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্থান পাবে। এটি গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে স্থান পেলে চট্টগ্রামকেও সম্মানিত করবে।

আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ (র.) চট্টগ্রামে জুলুসের নেতৃত্ব দেন ১৯৭৬ সালে। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি জুলুসে নেতৃত্ব দেন। ১৯৮৭ সাল থেকে তিনি আর বাংলাদেশে আসেননি। তখন থেকে জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হুজুর কেবলা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মজিআ)। এটি তাঁর নেতৃত্বে ৩৫তম জুলুস।

জুলুসে হুজুর কেবলাকে বহনকারী বিশেষ গাড়ির চারপাশে, খানকাহ শরীফে, জামেয়া মাঠসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বিশেষ দায়িত্ব পালন করেছেন আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্স (এএসএফ)। এ ফোর্সের প্রধান সাদেক হোসেন পাপ্পু জানান, এএসএফের পোশাক পরা তিনশ’ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা, আলমগীর খানকাহ, বিবিরহাট, চকবাজার, মুরাদপুর, জামালখান, কাজীর দেউড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশুদ্ধ পানির স্টল দেওয়া হয়েছে। জুলুসের মাঠ ঘিরে রেললাইন ও আশপাশের এলাকায় বসেছে টুপি, আতর, ইসলামিক বই, পাঞ্জাবি, পাজামা, তসবিহ, জুতো, স্যান্ডেল, মোবাইল যন্ত্রাংশ, মুড়ি-মুড়কি, মুখরোচক খাবার, ফলের দোকান।