ই-পেপার | শুক্রবার , ৩ মে, ২০২৪
×

নতুনত্ব নিয়ে আসছে বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস

ক্রীড়া রিপোর্টার ::

ইউরোপের ক্লাবগুলোর সমর্থকদের পথ অবলম্বন করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের সমর্থকরাও। দেশের ফুটবলে বসুন্ধরা কিংস আবির্ভূত হওয়ার পর থেকে সমর্থকরা নতুন জাগরণ তৈরি করেছে।সেই জাগরণে যাত্রা শুরু করে বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস।

বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচ মানেই মাঠে গিয়ে সমর্থন জোগানোই তাদের কাজ। দেশের ফুটবলে বদলের হাওয়া আনতে ভূমিকা রয়েছে তাদেরও। ২৯ এপ্রিল ২০২১ যাত্রা শুরু হয় কিংস আলট্রাসের। গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বসুন্ধরা কিংস সভাপতির কার্যালয় থেকে অফিসিয়াল স্বীকৃতি সনদ গ্রহণ করেন আলট্রাস প্রতিনিধিগণ।

প্রতিষ্ঠার ২ বছরের মধ্যে ক্লাব হতে অফিসিয়াল স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে বেশ কিছু নতুনত্ব নিয়ে এসেছে বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস। শুরুতে আলট্রাসের ভাবধারা চেনাতে কষ্টসাধ্য হলেও প্রতিনিয়ত তাদের কার্যক্রমের ফলস্বরূপ সবার নিকট আলট্রাস এখন পরিচিত নাম।  

২০২২ সালের মাঝামাঝিতে বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস গ্যালারিতে কালার স্মোক ওড়ানোর সূচনা করে, যা বাংলাদেশ ফুটবলের গ্যালারিতে একটি নতুন সংযোজন। এরপর কালার স্মোকের পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে আতশবাজি (পাইরো), ভুভুজেলা, ড্রামের মাধ্যমে সম্মিলিত উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো।  

তবে তাদের যাত্রাটা সহজ ছিলো না। কিংস আলট্রাসের প্রতিষ্ঠাতা ও এডমিন মো. সারোয়ার আলম খান বলেন, ‘ফুটবলের আন্তর্জাতিক পরিসরে আলট্রাস একটি ব্র্যান্ড হলেও লোকাল ফুটবলে আলট্রাসের পরিচিতি ছিল না। তাই শুরুতে আলট্রাসের ভাইভ চেনাতে প্রতিপক্ষ, এমনকি নিজ ক্লাবের ফ্যানদের সামনেও হিমশিম খেতে হয়েছে। কালার স্মোক এবং ফায়ারওয়ার্কস (পাইরো) ওপেন করাতে স্টেডিয়ামের সিকিউরিটি গার্ড এবং পুলিশ দ্বারা একাধিকবার নাজেহাল হতে হয়েছে। গত ম্যাচেও একসঙ্গে দাঁড়িয়ে চিয়ারআপ করার জন্য পাশের সিট থেকে কিছু দর্শক আমাদের মারতে এসেছে। উনাদের বক্তব্য চুপচাপ বসে খেলা দেখতে, যেটিতে আলট্রাস অভ্যস্ত নয়। ‘

‘আমরা আমাদের লক্ষ্যে অবিচল। সেজন্য আমরা হাল ছাড়িনি। সিকিউরিটি স্টাফদের মাঝেমধ্যে বহির্বিশ্বের আলট্রাসের এধরনের কাজগুলো আমরা ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর মাধ্যমে দেখাতাম, যেন উনারা বুঝতে পারে যে এসব নতুন কিছু নয়। পুরোপুরি না হলেও ধীরে ধীরে এখন সেটি অনেকটাই স্বাভাবিক পর্যায়ে,’ যোগ করেন তিনি।

আলট্রাস নিজেদের দলের সমর্থনের পাশাপাশি প্রতিপক্ষের সমর্থকদেরও সম্মান জানায়।  
গত বছরের ৭ নভেম্বর, বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত হোম ম্যাচ দেখতে মোহনবাগানের সমর্থকগোষ্ঠী ‘মেরিনার্স বেইজক্যাম্প – আলট্রাস মোহনবাগান’ এর কয়েকজন সদস্য এসেছিলেন। বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। শুভেচ্ছা বিনিময় ও উপহার সামগ্রীও প্রদান করে। গত বছর গোপালগঞ্জে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে ম্যাচ শুরুর আগে মোহামেডান ফ্যান ক্লাবকে ফুলেল শুভেচ্ছা বিনিময় করে বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস।  

আগামীতে নিজেদের লক্ষ্য জানাতে গিয়ে সারোয়ার আলম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দেশীয় ফুটবলে আলট্রাসের উচ্ছলতাকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া। ওয়ার্ল্ড আলট্রাসের সকল এক্টিভিটির একটি উজ্জ্বলতম জায়গায় যেন বাংলাদেশের নামটিও যুক্ত হয়, সেজন্য কাজ করে যাবো। সর্বোপরি দেশের তরুণ সমাজ ও ইউরোপীয় ফুটবলে মত্ত থাকা একটি বড় ফুটবল সমর্থকগোষ্ঠীকে দেশীয় গ্যালারিতে নিয়ে আসতে চাই। কারণ উনারা আলট্রাসের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। তাই উনারা এলে আমাদের কাজের পরিধি দ্রুত বড় হবে। পরিশেষে, দেশের ফুটবলে প্রয়োজনীয় সকল দাবিগুলো গ্যালারি থেকে আওয়াজ ওঠাতে চাই। ‘

১৪ জুলাই আবাহনী ম্যাচের বিপক্ষে নিজস্ব লোগো সংবলিত ১২০০ বর্গফুটের একটি টিফো প্রদর্শন করে বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস, যেটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবলে সবচেয়ে বড় টিফো হিসেবে বিবেচিত।  

বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস শুধু গ্যালারিতেই থাকে এমন নয়, তারা মাঠেও খেলে থাকেন। রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ ও গোপালগঞ্জে তাদের নিজস্ব আন্ডারগ্রাউন্ড ফুটসাল টিম রয়েছে। এখন পর্যন্ত বেশ কিছু ফুটসাল টুর্নামেন্টে তারা অংশগ্রহণ করেছে।  

সবমিলিয়ে বসুন্ধরা কিংস আলট্রাস তাদের কর্মকাণ্ডে নতুনত্ব নিয়ে এসেছে, যা দেশের তরুণ ফুটবলপ্রেমীদের খুব সহজেই নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।