ই-পেপার | বুধবার , ১ মে, ২০২৪
×

সৎ ভাই-বোনের সম্পত্তি জোরপূর্বক গ্রাস করার অপচেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রাম নগরীর পাচলাইশ থানাধীন এলাকায় আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি কর্তৃক তার সৎ মা ও ভাই-বোনের সম্পত্তি বেআইনিভানে জোরপূর্বক আত্মসাতের অপচেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ভুক্তভোগী পরিবার। ২৬ আগস্ট (শনিবার),সকাল ১১ টায় প্রেসক্লাব ভবনের এস রহমান হ’লে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী। আমি মৃত ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর ২য় স্ত্রী হই। পক্ষান্তরে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরী হচ্ছে ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর ১ম সংসারের সন্তান। বিগত ২০১২ সালের এপ্রিলের ১১ তারিখ আমার স্বামী ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী হঠাৎ মৃত্যুবরণ করলে তার সহায় সম্পত্তি ও অর্থকড়ি নিয়ে আমার সাথে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরীর বিরোধ শুরু হয়।

উক্ত বিরোধের জের ধরে সে ২০২৩ সালের আগস্টের ১৬ তারিখ পাঁচলাইশ থানাধীন আমার মাতা রিজিয়া বেগমের ব্যক্তি মালিকানাধীন ‘রিজিয়া ম্যানশন’ সে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে। এবং তার একটি বিদেশী পালক পাগলা কুকুর নিয়ে উক্ত রিজিয়া ম্যানশনের ভবনের ভেতর অবস্থান করতে থাকে।

আমি উক্ত বিষয় পাঁচলাইশ থানাকে অবগত করলেও বিষয়টি ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন মজুমদার ও এস আই মোঃ জাকির আমাকে আইনি সহযোগিতা না করে বরং কোর্টের নিষেধাজ্ঞার আদেশকে অমান্য করে বেআইনিভাবে আহমেদ ফয়সাল চৌধুরীকে রিজিয়া ম্যানশন ভবনের ভিতর অবস্থান করার জন্য সহযোগিতা করে।

আহমেদ ফয়সাল বেআইনি কাজে প্রশ্রয় পেয়ে আমার কাছে (শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী) ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি ও জানে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। এতে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য এই মাসের ১৭ আগস্ট আহমেদ ফয়সালসহ পাঁচলাইশ থানার ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন মজুমদার,এস আই মোঃ জাকিরের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন আদালত চট্টগ্রামে সি আর মামলা-৬১১/২০২৩ নং দায়ের করি।
বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ শুনানীঅন্তে সি আর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য আদেশ প্রদান করেন।

উক্ত মামলা দায়েরের পর বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালের মাধ্যমে ইতিমধ্যে উক্ত আদেশের সংবাদ প্রচারিত হয়। আহমেদ ফয়সাল উক্ত মামলা সম্পর্কে অবগত হয়ে তার অন্যায় আচরণকে ধামা-চাপা দিতে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেন

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান, আমার স্বামী মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী তার জীবদ্দশায় তিনিসহ আরো তিন জন মিলে ‘মেসার্স নুপুর এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’ নামীয় একটি কোম্পানি গঠন করেন। যা নুপুর মার্কেট নামে পরিচিত। পরবর্তীতে আমার স্বামী ওয়াহেদ আজগর চৌধুরী মৃত্যুবরণ করলে তার ১ম সংসারের সন্তানগণ আহমদ ফয়সাল চৌধুরী, আহমদ রাসেল চৌধুরী ও ফারজিন চৌধুরী দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নুপুর মার্কেটের আমার স্বামীর অংশের ভাড়ার লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে থাকে।

আমি দ্বিতীয়া স্ত্রী শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী এবং আমার এক কন্যা সন্তান সামিনা চৌধুরী ও এক পুত্র সন্তান নাবালক আহমদ ফারহান চৌধুরীসহ আমার স্বামীর প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা তার রেখে যাওয়া সকল স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তির একমাত্র ওয়ারিশ বলবত থাকি।

মূলতঃ আহমেদ ফয়সাল আমি (তার সৎ মা শামীমা ওয়াহেদ চৌধুরী) ও তার সৎ ভাই-বোনের সম্পত্তি বেআইনিভাবে গ্রাস করার জন্য মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর দ্বিতীয়া সন্তানদের ওয়ারিশ নয় মর্মে সে বিভিন্ন অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। এমনকি সে আমাদের সম্পত্তি আত্মসাত করার উদ্দেশ্যে বিগত ২০১৩ ইং সনের ১৯ শে মার্চ ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিস থেকে প্রতারণামূলকভাবে ভুয়া ওয়ারিশান সনদপত্র তৈরী করে। এবং বিগত ২০১৩ইং সনের ১০ ই জুনে কাউন্সিলর মহোদয় উক্ত ২০১৩ইং সনের ১৯ শে মার্চের ওয়ারিশান সনদ মিথ্যা ও ভুল উল্লেখ করে একটি ঘোষণা প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন ।

মূলতঃ সম্পত্তি আত্নসাৎ করা নিয়ে আহমদে ফয়সাল চৌধুরীসহ অন্যান্যদের সাথে আমার বিরোধ শুরু হয় এবং আমাকে মিথ্যাভাবে ফাসানো ও সামাজিকভাবে হেনস্থা করার উদ্দেশ্যে আহমদে ফয়সাল চৌধুরী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেওয়ানী- ফৌজদারী আদালতে মামলা মোকাদ্দমা দায়ের করেন যার মধ্যে ১ম সিনিয়র সহকারী জজ অপর মামলা নং ৫২/২০১৩ ও অপর আরেকব মামলা নং ১৪৫/২০১২ তে আহমদ ফয়সাল চৌধুরী, আহমদ রাসেল চৌধুরী ও ফারজিন চৌধুরীসহ ২০১২ইং সনের এপ্রিলের ১৯ তারিখ ২২ নং এনায়েত বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে ওয়ারিশান সনদ উপস্থাপন করে আমিসহ তার আমার নাবালক সন্তানদের মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর ওয়ারিশ হিসেবে স্বীকার করে সোলেনামা দাখিলের মাধ্যমে বিগত ২০১৫ ইং সনের ১৯ শে জুলাই সোলেসূত্রে রায় ও ডিক্রি হয়ে মামলা খারিজ হয়।

এছাড়া ৩য় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অপর মামলা নং ৩৪১/১৩ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিগত ২০১৮ ইং সনের ৩ ই মে বিজ্ঞ ১ম যুগ্ম জেলা জজ কর্তৃক মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর ওয়ারিশদের বরাবর সাকসেশন সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয় ও গার্ডিয়ান শীপ মামলা নং- ৫১/২০১২ তে ৫,০০,০০,০০০ (পাঁচ কোটি) টাকা আহমদ ফয়সাল চৌধুরী, আহমদ রাসেল চৌধুরী ও ফারজিন চৌধুরী আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে হামজারবাগ এলাকায় পাঁচলাইশ থানাধীন রিজিয়া ম্যানসনের বাড়িটি ছেড়ে দেওয়া বাবৎ ৫,০০,০০,০০০ (পাঁচ কোটি) টাকার চেক এবং পে-অর্ডারের মাধ্যমে আমি শামীমা ওয়াহেদ থেকে নিয়ে যায়। তা পরবর্তীতে অস্বীকার করলে মানি মামলা হিসাবে উদ্বুদ্ধ হয়ে বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

আরো উল্লেখ্য যে, আহমদ ফয়সাল চৌধুরী কর্তৃক দায়েরী ফৌজদারী মামলা সি আর মামলা নং-১১৫০/২০১২, সি আর মামলা নং-২৫৮/২০১৩ মামলাসমূহে অভিযোগ সত্যতা পায় নাই মর্মে খারিজ হয়। এছাড়া রিজিয়া ম্যানশান সংক্রান্তে আহমদ ফয়সাল কর্তৃক দায়েরী কোম্পানি সংক্রান্তে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে কোম্পানি ম্যাটার নং-২৫৬/২০ বর্তমানে বিচারাধীন আছে। শামীমা ওয়াহেদ এবং তাঁর নাবালক সন্তানদের মরহুম ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে সামাজিকভাবে হেনস্থা ও অপদস্ত করার লক্ষ্যে এ সমস্ত ঘৃণ্য কাজ করে যাচ্ছে এই আহমদ ফয়সাল চৌধুরী।

সেসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা পরধনলোভী, আত্নসাতকারী, মামলাবাজ এবং জোড়-জুলুমবাজ স্বভাবের লোক হন । প্রতারণামূলকভাবে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে আসছেন সেই সংক্রান্তে তার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ পক্ষে ভাইস চ্যান্সেলর মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং- ১২৫৩৫/২০১৮ দায়ের করেন যা বিচারাধীনআছে।

আমার স্বামী ওয়াহেদ আজগর চৌধুরীর মৃত্যুতে আমি দুই নাবালক সন্তান নিয়ে আজ অসহায় অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছি। তাদের সৎ ভাই আহমেদ ফয়সাল চৌধুরীর এসব অত্যাচার ও নির্যাতন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সে আমাকে তার পিতার স্ত্রী হিসেবে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমায় স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে সোলেনামা দিয়েও আজ আমাকে গৃহহীন করার উদ্দেশ্যে এসব মিথ্যাচার করছেন। আমি ও আমার পরিবার তার এমন অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সামিনা ওয়াহেদ চৌধুরী, ফারহান ওয়াহেদ চৌধুরী, রাশেদুল হাসান, রিজিয়া বেগম, আরশাদ উল্লাহ ও সাজ্জাদুল ইসলাম প্রমুখ।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত রিপোর্ট