ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ৯ মে, ২০২৪
×

বাণিজ্যিক মটরযানের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সরকার কর্তৃক বাস,মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০ বছর ও ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের ২৫ বছর ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করে দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশন। ১৮ জুলাই (মঙ্গলবার) দুপুর ১২ টায়, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে ফেডারেশনের সদস্য সচি মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়নের যে কয়েকটি খাত রয়েছে তার মধ্যে পণ্য ও গণ পরিবহন খাত অন্যতম। এই খাতে জড়িত মালিকান লাভ লোকসানের হিসাব ব্যতিরেকে সরকারকে অগ্রিম ট্যাক্স দিয়ে পরিবহন ব্যবসা পরিচালনা করিয়া থাকেন। পণ্য পরিবহন যাহা দেশের একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য সহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রবাসী ও বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার কাঁচামাল মানুষের দোড় গোঁড়ায় পৌঁছে দিয়ে থাকেন। আর গণপরিবহন সাধারণ মানুষের প্রয়োজনে দেশের একপ্রান্ত হতে অপর প্রান্তে যাতায়াতে অনন্য ভূমিকা পালন করিয়া আসিতেছেন। সরকার বিভিন্ন শিল্প কলকারখানাকে ভর্তুকি দিয়ে। বাচিয়ে রাখলেও গণ ও পণ্য পরিবহন শিল্পের কোন মূল্যায়ন নেই বলিলে চলে।

বিগত ১/১১, ২০১৩-২০১৪ সালে সরকার বিরোধী জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন, করোনা মহামারী, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মন্দাভাবের সময় দেশের অর্থনৈতিক ঢাকা সচল রাখতে পণ্য ও গণ পরিবহনের মালিক শ্রমিকগন মৃত্যুকে পরোয়া করেননি। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিগত বছর গুলোতে জ্বালানী তেলের মূল্য, গাড়ীতে ব্যবহত সকল প্রকার খুচরা যন্ত্রাংশের মূল্য এবং যানবাহনে ব্যবহৃত ডকুমেন্টে সকল প্রকার রেভিনিউ যেভাবে বন্ধি করা হয়েছে মাস শেষে তাহা পরিশোধ করে একজন পরিবহণ মালিকের অবশিষ্ট বলতে আর কিছুই থাকে না। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সরকার বিগত ১৭/০৫/২০১৩ইং তারিখে সরকার কর্তৃক বাস মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০ বছর এবং ট্রাক কভার্ডভ্যানের ক্ষেত্রে ২৫ বছর ইকোনমিক লাইফ নির্ধারণ করে দেওয়া মানে যানবাহন মালিকদের মরার উপর খাড়ার ঘা। কারণ বর্তমানে একজন পরিবহন মালিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে যেভাবে ভাড়া হওয়ার কথা সেভাবে ভাড়া হচ্ছেনা বিধায় একজন গাড়ীর মালিক- চালক/সহকারীর বেতন ভাতা পরিশোধ করা দুরের কথা নিজেরাই অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করিতেছে এবং প্রত্যেক পরিবহন মালিকের নীরব আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।

তিনি আরো বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সদ্য জারীকৃত যানবাহনের ইকোনমিক লাইফ প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়ন করিলে দেশে প্রায় ৬৫,০০০ বাস মিনিবাস, ট্রাক, কভার্ডভ্যান বন্ধ হয়ে যাবে। আর ইহার সহিত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় লক্ষ লক্ষ মালিক শ্রমিক অর্ধাহারে অনাহারে খুবই কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করিবে। তাছাড়া উল্লেখিত গাড়ীগুলো স্ক্র্যাপ ঘোষনা করিলে সাধারণ মালিকের যেমন হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট হবে তেমনি উল্লেখিত গাড়ীগুলোর অনুকূলে সরকার গাড়ী আমদানী করিলে হাজার হাজার কোটি টাকার মুদ্রা অপচয় হইবে।

এ ধরনের বিনিয়োগ কোন ভাবে কাম্যহতে পারে না । উল্লেখ্য যে, সরকারের আমদানী নীতি অনুযায়ী গাড়ীর ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশ আমদানী হয় বিধায় কোন যানবাহনই অচল থাকে না বরং ক্ষতিগ্রস্থ ইঞ্জিন বা ইঞ্জিনের পার্টস, বড়ি বা আনুসাঙ্গিক অন্যান্য পার্টস নতুন করে রিপ্লেসমেন্ট করিলে সকল যানবানই সম্পূর্ণ রূপে বিআরটিএ এর ফিটনেস- সার্টিফিকেট অনুযায়ী চলাচলের যোগ্যতা রাখে। উপরোক্ত একসাথে গণ ও পণ্য পরিবহনে চালিত যানবাহন বাতিল। করা হলে দেশে একপ্রকার গাড়ীর সংকট হবে এবং যেহেতু আগামী ০৬ মাস পর জাতীয় নির্বাচন ও বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দাভাব বিরাজ করিতেছে এই মুহুর্তে এই ধরনের আইন প্রয়োগ করে সরকারের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান।

আমাদের দাবি হচ্ছে, জাতীর এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান গাড়ীর আয়ুস্কালের নীতিমালা প্রণয়নে বিভাগীয় পর্যায় থেকে মালিক প্রতিনিধির স্ক্র্যাপ নীতিতে সম্পৃক্ত করা,২০২৪-২৫ আর্থিক সাল থেকে স্ক্রাপ নীতি পূণঃ সংশোধন করে কার্যকর করা, বিআরটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন তারিখ থেকে মেয়াদ নির্ধারণ করা ও বিআরটিএ সার্ভার সচল করে ডকুমেন্টের হালনাগাদ নাবায়ন সুযোগ দেওয়া।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম বন্দর ট্রাক কাভারভ্যান মালিক ও কন্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক জহুর আহাম্মদ, আন্তঃজিলা বাস মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দীন আহমেদ, চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ মহাসচিব মঞ্জুরুল আলম চৌঃ, কাপ্তাই বাস মালিক সমিতি সভাপতি মোরশেদুল আলম কাদেরী, চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মোটর মালিক সমিতি সভাপতি সৈয়দ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, উত্তর জেলা ট্রাক মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ চৌং, ধুম শুভপুর বাস মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবচার, যাত্রী সেবা বাস মালিক গ্রুপ মোঃ মোশারফ হোসেন, ফেনী জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ সভাপতি গোলাম নবী, চট্টগ্রাম জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক খোরশেদুল আলম, সহ-সভাপতি চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ আনোয়ার আজিম খান, চট্টগ্রাম নাজিরহাট খাগড়াছড়ি বাস মিনিবাস মালিক সমিতি সভাপতি হাজী রহুল আমিন চৌঃ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ সভাপতি মোঃ বেলায়েত হোসেন, চট্টগ্রাম নাজিরহাট খাগড়াছড়ি বাস মিনিবাস মালিক সমিতি যুগ্ম সম্পাদক ফারুক খাঁন, চট্টগ্রাম নাজিরহাট খাগড়াছড়ি বাস মিনিবাস মালিক সমিতি যুগ্ম সম্পাদক মোঃ জাফর আলম, চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি মোটর মালিক সমিতি যুগ্ম সম্পাদক মনছুরুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম কক্সবাজার কোর্চ মালিক সমিতির মোশারফ হোসেন, খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ সম্পাদক মোঃ হারুন অর রশিদ, সিটি বাস মালিক সমিতি মোঃ ইসহাক, মাঝিরঘাট ট্রাক মালিক সমিতি মোঃ ইসহাক প্রমুখ।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত রিপোর্ট