ই-পেপার | বুধবার , ১ মে, ২০২৪
×

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে নিজেদের অবস্থা পরখ করবে বাংলাদেশ

নিজেদের প্রিয় ফরম্যাটে আফগানিস্তানের কাছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হার বাংলাদেশের জন্য বড় ধাক্কা। কারণ ২০১৫ সাল থেকে ঘরের মাঠে এই ফরম্যাটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ছাড়া কোন দলের কাছে সিরিজ হারেনি টাইগাররা। 

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সব সময়ই শক্তিশালী দল আফগানিস্তান। তারপরও এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের কাছে তারা বড় প্রতিপক্ষ ছিলো না। এই সিরিজের আগে, জয়-হারের হিসেবে এগিয়ে ছিলো বাংলাদেশই। ৭টিতে জয় এবং চারটিতে হার ছিলো বাংলাদেশের। 

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে জয়-হারের ব্যবধান কমিয়ে এনেছে আফগানিস্তান। তবে এটি বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, হারের পর দলের মধ্যে বেশ কিছু ঘাটতি ফুটে উঠেছে। যা দ্রুতই সমাধানের প্রয়োজন। কিন্তু বিশ্বকাপের আগে মাত্র তিন মাস সময় আছে বাংলাদেশের হাতে। এর মধ্যে এশিয়া কাপও খেলবে তারা।

সব সমস্যা সমাধানের জন্য সময় খুব কম থাকলেও বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ বিশ্বাস করেন, সমস্যার  সমাধান সম্ভব। মিরাজ বলেন, ‘এই দু’টি ম্যাচে আমাদের যা ঘাটতি ছিল এবং আমরা যে ভুলগুলো করেছি, এজন্য আমরা আরও বেশি সতর্ক হয়ে যাবো। কারণ আমাদের সামনে বড় সিরিজ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে তাদের বিপক্ষে খেলা আছে আমাদের এবং আমি আশা করি আমরা ভুলগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবো।’প্রথম ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে এবং দ্বিতীয়টিতে ১৪২ রানে হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়টি আফগানিস্তানের কাছে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার বাংলাদেশের। দু’টি ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং নড়বড়ে ছিলো এবং নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যটাররা। 

মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান ছাড়া কেউই আফগানিস্তানের দুই স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানকে সামলাতে পারেননি। বিশেষ করে রশিদের গুগলি বুঝতে হিমশিম খেয়েছে তারা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মানসম্পন্ন বোলারদের মোকাবেলা করা কতটা কঠিন, সেটি বুঝতে পেরেছেন সম্প্রতি দারুন ছন্দে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত এবং লিটন দাস।

ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বেশিরভাগ রান করেছেন শান্ত ও লিটন। কিন্তুদ্বিতীয় ওয়ানডেতে উইকেট ব্যাটিং সহায়ক ছিলো না-এমনটা নয়। এই উইকেটেই ৯ উইকেটে ৩৩১ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় আফগানিস্তান। কিন্তু পার্থক্য তৈরি করেন রশিদ। উইকেটকে কঠিন বানিয়ে ফেলেন তিনি। সাকিব ও মুশফিক ছাড়া প্রতিপক্ষের লেগ স্পিনারদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সাহসের অভাব ফুটে উঠে।

যদিও মাত্র ২৫ রান করতে পারেন সাকিব। এই ছোট ইনিংস খেলার পথে সাকিব দেখিয়েছেন কিভাবে রশিদকে সামলাতে হয়। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হবার আগে এক প্রান্ত আগলে লড়াই করে ৬৯ রান করেন মুশফিক। 

এমন হার দলের জন্য আর্শীবাদ হয়ে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। মিরাজ জানান, একটি নির্দিষ্ট বোলারকে কিভাবে সামলাতে হবে সেটি নিয়ে এখন আলাদাভাবে পরিকল্পনা করতে পারবে প্রতিটি খেলোয়াড়।

মিরাজ বলেন, ‘একটি ভাল ব্যপার হচ্ছে আমাদের কাছে এখন সুযোগ রয়েছে। এই সিরিজটি হেরে যাবার মানেই হলো, আমাদের কোথায় ঘাটতি ছিল এবং আমাদের কোথায় উন্নতি করতে হবে সেটি নিয়ে কাজ করতে পারবো। যেহেতু তাদের বিপক্ষেই আমাদের বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপে খেলা আছে, সেহেতু আমরা ব্যাটাররা খেলার পরিকল্পনা করতে পারি। আমরা কোন বোলারদের টার্গেট করতে পারি বা কিভাবে তাদের ব্যাটারদের থামাতে পারি। যেহেতু আমাদের কাছে বিশ্বকাপের তিন মাস এবং এশিয়া কাপের দেড় মাস আছে, প্রত্যক ক্রিকেটার আলাদাভাবে পরিকল্পনা করতে পারে। আমাদের কাছে সময় থাকায় ভালো হয়েছে।’

মিরাজের দৃষ্টিতে  একটি সিরিজ হেরে যাওয়াতে ওয়ানডেতে খারাপ দল হয়ে যায়নি বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম, আমরা যদি এই সিরিজে খারাপ করি তবে এর মানে এই নয়, আমরা খারাপ দল হয়ে গেছি। আমাদের রেকর্ড খুব ভাল এবং আমরা বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছি। আমাদের দলের কম্বিনেশন ভাল এবং খেলোয়াড়রা ভালো অবস্থায় আছে। সব কিছু মিলিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী।’