ই-পেপার | শুক্রবার , ৩ মে, ২০২৪
×

অথচ মাঠেই নামার কথা ছিল না শামার জোসেফের

ক্রীড়া রিপোর্টার ::

আগেরদিন মিচেল স্টার্কের গতিময় একটি ইয়র্কার গিয়ে আঘাত হানে শামার জোসেফের ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে। আঙ্গুল ফেটে রক্ত বের হওয়ার মত অবস্থা। দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে মাঠ ছেড়ে যান তিনি। তৃতীয় দিন বিকেলে আর মাঠেই নামতে পারেননি ক্যারিবীয় এই পেসার।

তৃতীয় দিন বিকেলেও কেউ কল্পনা করতে পারেনি এই টেস্টে আর খেলতে নামতে পারবেন শামার জোসেফ। শুধু তাই নয়, এই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিততে পারে, এই চিন্তাও কেউ করেনি। কারণ, ইতিহাসের সবচেয়ে দূর্বলতম দলটি নিয়েই হয়তো অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে গিয়েছিলো ক্যারিবীয়রা।

২১৬ রানের লক্ষ্য। যদিও এই লক্ষ্য তাড়া করতে নামার পর তৃতীয় দিন বিকেলেই দুটি উইকেট তুলে নেন অ্যালজারি জোসেফ এবং জাস্টিন গ্রিভস। কিন্তু ৪২ রানে ২ উইকেট পড়ার পর স্টিভেন স্মিথ এবং ক্যামেরন গ্রিণের ব্যাটে ভালোই জুটি গড়ে দাঁড়িয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৭৩ রানের জুটি গড়ে ধীরে ধীরে ম্যাচটাও বের করে নিয়ে আসছিলেন তারা।

কিন্তু শামার জোসেফকে চিকিৎসা করে সারিয়ে তোলেন তার ডাক্তার এবং চতুর্থ দিন মাঠে নেমে ইতিহাস গড়ে ফেললেন তিনি। ইনিংসের ২৮ ওভার পেরিয়ে যাওয়ার পর মাঠে নেমে বল হাতে তুলে নেন তিনি।

চতুর্থ দিনের প্রথম একঘণ্টা খেলা হওয়ার পর বোলিংয়ে আসেন জোসেফ। টানা ১১.৫ ওভার বোলিং করলেন তিনি। এর মধ্যে ৬৮ রান দিয়ে নিলেন ৭ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার বাকি ৮ উইকেটের ৭টিই উঠলো তার পকেটে।

অথচ, আজ মাঠেই নামার কথা ছিল না জোসেফের। ম্যাচ শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিজয়ের এই নায়ক কথা বলতে গিয়ে জানালেন, তার মাঠেই নামার কথা ছিল না। এ সময় অবশ্য ডাক্তারের প্রশংসা করেন তিনি। জোসেফ বলেন, ‘এমনকি আজ আমি সকালে মাঠেই পর্যন্ত নামিনি। অবশ্যই আমার উচিৎ ডাক্তারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা। তিনি আমার জন্য অসাধারণ একজন চিকিৎসক। তিনি আমাকে বললেন মাঠে নেমে আসতে। এমনকি কারো সহায়তায় হলেও।’

‘এরপর আমি মাঠে নামি। তিনি আমার আঙ্গুলে কি কি সব করলেন। আমি জানি না তিনি কী করেছেন। তবে এটা বেশ কাজ দিয়েছে। এরপর আমি মাঠে নামি এবং বোলিং করি। শেষ পর্যন্ত আমার দলের জন্য জয়টা ছিনিয়ে আনতে পেরেছি।’

অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটেরও প্রশংসা করেন জোসেফ যে, তার ওপর আস্থা রাখার জন্য। শেষ উইকেট না পড়া পর্যন্ত আমাকেই বোলিং চালিয়ে যেতে বললেন অধিনায়ক।

জোসেফ বলেন, ‘এটা খুব ইতিবাচক বিষয় যে, আমার সব সতীর্থ আমাকে সমর্থন দিয়েছেন এবং বলেছেন, এভাবে বল করো এবং উইকেট নাও।’কার্টলি অ্যামব্রোসের ৩১ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কোনো ক্যারিবীয় ক্রিকেটার নিলেন ৭ উইকেট। শুধু তাই নয়, শামার জোসেফের হাত ধরে প্রায় ২০ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।