ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২ মে, ২০২৪
×

মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়ে জাবেদ আবছার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার,আদালতে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
অনুমোদনহীন তথাকথিত অনলাইন পোর্টালের নাম দিয়ে চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে যাচ্ছেন জালাল উদ্দিন সাগর নামে এক ভুয়া সাংবাদিক। স্ত্রী পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ার সুবাদে ধরাকে সরা জ্ঞান করে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, পতিতাবৃত্তিসহ এমন কোন কাজ নেই যা করছে না এই জালাল।

জানা যায়, জালাল উদ্দিন সাগর একজন চিহ্নিত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী । বিভিন্ন থানায় ও আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে । উধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে দালালী করা তার পেশা, ক্লিক ম্যাগাজিনের মডেল বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং এর মাধ্যমে যুবতীদেরকে বিভিন্ন ব্যাক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক সৃষ্টি করে দেওয়াও তার ব্যবসা। এছাড়া তার অফিসে প্রতিনিয়ত ইয়াবা আসক্ত যুবক যুবতীদের আনা গোনা রয়েছে। জালাল উদ্দিন সাগরের ক্ষমতার এক মাত্র উৎস তার স্ত্রী পুলিশ কর্মকর্তা। তার প্রকাশিত ম্যাগাজিন ক্লিক সরকারী কোন অনুমোদন নেই এবং অনলাইন ওয়েব সাইট www clicknewsbd.com সরকারী অনুমোদন নেই। সাংবাদিকতার আড়ালে মূলত ব্লাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে চাদাবাজি, ইয়াবা ব্যবসা, মডেলিং এর লোভ দেখিয়ে মেয়েদেরকে পতিতাবৃত্তিতে নামানোই তার প্রধান কাজ।
চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা শিরোনাম প্রথম আলোতেও জালাল উদ্দিন সাগর ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সম্প্রতি এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও জালাল চাদা দাবি করেছে। চাঁদা না পেয়ে তার পোর্টাল ক্লিক ম্যাগাজিনে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যা নয় তা সংবাদ প্রকাশ করেছে।
এ ব্যাপারে আদালতে মামলা করেছেন উক্ত ব্যবসায়ী জাবেদ আবছার চৌধুরী ।
প্রকাশিত সংবাদটি মিথ্যা দাবি করে ব্যবসায়ী জাবেদ বলেন, রাজাকার বাহিনী 1971 সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আমার পিতা নুরুল আবছার চৌধুরী 1971 সালের এপ্রিল মাসে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সোসাইটি দ্বারা আয়োজিত একটি বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে ভারতে চলে যান। ভারতে থেকে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা সহ দেশের জন্য কাজ করে গিয়েছিল। আমার নানা ছিলেন কলিকাতা হাইকোর্টের একজন বিজ্ঞ আইনজীবী এবং আনোয়ারার কৃতি সন্তান। তিনি কলকাতায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেক কাজ করে দিয়েছিলেন। কলিকাতায় আমার নানার বাড়িতে অনেক নেতা অবস্থান করেছিল এবং চট্টগ্রামের শহরের বাড়িগুলোতে আনোয়ারা অনেক হিন্দু পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। সরকারের অনুমোদন এবং নিবন্ধন হীন পোর্টালে tiktok ভিডিও বানিয়ে চাঁদাবাজি করার ফন্দি এঁটেছে জালাল। বাংলাদেশ সরকারের কোন গেজেট এবং মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কোথায় নিবন্ধিত হয়েছে আমার পিতার নাম ? তিনি মারা গিয়েছেন ৩০ বছর আগে আর আমরা স্বাধীনতার 50 বছরের পূর্তি করেছি। হলুদ সাংবাদিকতার জন্য এত নিচে নামতে পারে জালাল আমার জানা ছিল না। জালাল উদ্দিন সাগরের নামে আগেও চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। সাংবাদিক সমাজ তাকে টাউট বাটপার বলে থাকে। ধিক্কার জানাই এই ধরনের সাংবাদিক পরিচয় দানকারীকে। আমার দাবি রাজাকার হিসেবে তার নিয়োগের জন্য পরিস্থিতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করতে হবে। আপনার মতামত অনুযায়ী তিনি কিভাবে রাজাকার হলেন ?
এটা অপরিহার্য, আইনি নীতি অনুসারে, প্রামাণিক প্রমাণ সহ দাবি প্রমাণ করা এবং যে কোনো বিবৃতির জন্য একটি বাস্তব ভিত্তি স্থাপন করতে হবে। আইনে ভুয়া সাংবাদিক জালাল উদ্দিন সাগরের বক্তব্য প্রমাণ করা কর্তব্য বলে মনে করেন এই ব্যবসায়ী।

মুক্তিযোদ্ধা গবেষক জামাল উদ্দিনের বইতে লিখেছেন ছাত্রজীবনে আইয়ুব বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে নুরুল আবছার চৌধুরী ছিলেন তৎকালে প্রথম সারির ছাত্রনেতাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৬৪ সালে গঠিত চট্টগ্রাম সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ঐ সময়ে ছাত্র ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলা শাখার অন্যতম নেতা ছিলেন নুরুল আবছার চৌধুরী। এছাড়া ১৯৬২ সালের কুখ্যাত শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিল আন্দোলন এবং ‘৬৪ সালের সর্বজনীন ভোটাধিকার আন্দোলনে অনন্য ভূমিকা পালন করে ছাত্র নেতৃত্বের শীর্ষে চলে আসেন। ‘৬৯ সালে আয়ুব বিরোধী আন্দোলনে তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ না করলেও পরোক্ষভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।
ক্লিক নিজের বিরুদ্ধে প্রযুক্তি আইনে মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির বাদির অভিযোগ আমলে নিয়ে এন্টিটেরোরিজম ইউনিট (অতিরিক্ত ডিআইজি) কে আগামি ২৭ মার্চের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সাইবার ট্রাইব্যনাল মামলা নং-১০/২০২৪,চট্টগ্রাম।
গত ২৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেব এর আদালতে মামলা দায়ের করেন ইঞ্জিনিয়ার মো: জাবেদ আবছার চৌধুরী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ৩০দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, চট্টগ্রাম সি আর মামলা নং-৩১০২/২০২৩ইং (কোতোয়ালী)।
এর আগে ২৬ ডিসেম্বর নগরীর ডবলমুরিং থানা ও সিআইডিতে পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন। যা সিআইডি, এন্টিটেরোরিজম ইউনিট ও পুলিশ বিষয়াটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে একটি সূত্র জানায়।