ই-পেপার | শুক্রবার , ৩ মে, ২০২৪
×

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ: সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করছে বিআরটিএ

ঢাকা অফিস :
সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করছে বিআরটিএ বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ ইলেকট্রিক ব্যাটারি এন্ড মোটর চালিত অটোরিক্সা অটোবইক সার্ভিস লিমিটেড। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সংগঠনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম।
সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৮ আগষ্ট২০২৩ইং রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী সিনিয়র সচিব, অর্থমন্ত্রণালয় ঢাকা এর কাছে আবেদনের উল্লেখ করে বলেন- প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২২ সালে ৪ এপ্রিল মহাসড়ক ব্যতিত অন্যান্য সকল সড়কে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চলাচল বৈধতার আদেশ দেন। ২০২৩ সালের প্রজ্ঞাপনের ৫.৫ এর কলামে তা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ বিআরটিএ সংস্থাপন অধিশাখা বিআরটিএ ১০ সদস্যের নীতিমালা অনুযায়ী আনুমানিক ৪০ লাখ অবৈধ ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা-অটোবাইক যা মন্ত্রণালয় নীতিমালার আওতায় আনতে পারছেনা, উচ্ছেদও করতে পারছেনা। ফলে এ সেক্টরে একটি সংঘবদ্ধচক্র পরিহন কাতকে জিম্মি করে ও বিআরটিএকে হাত করে প্রতি মাসে শত শত কোটি টাকা চাঁদাবাজি করছে। সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। বিষয়টি দু:খজনক। তিনি এর তীব্র নিন্দাজ্ঞাপন করে বলেন, সরকারী এসব দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত রাজস্ব বৃদ্ধি অথচ ঘটছে উল্টোটা। প্রকৃত সত্য হলো বিআরটিএ ২০১৫ইং থেকে ৪০ লাখ ব্যাটারি চালিত ইলেকট্রিক অটোরিক্সা-অটোবাইক পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা এসব গাড়ীগুলোকে বৈধতা দেয়ার কথা বললেও বিআরটিএ নীতিমালায় এসব গাড়ী পরিচালনার নিয়ম নেই বলে দায়সারা জবাব দেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তবে মো: আবুল কালাম বলেন- সরকার অনুমোদিত এ প্রতিষ্ঠানটির ৬৪ জেলা ও উপজেলায় শাখা অফিস রয়েছে। দীর্ঘদিন অফিস ভাড়া দিয়ে কোম্পানী ক্ষতিগ্রস্থ পরিস্থিতিতেও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন-অত্যন্ত দু:খের সাথে বলতে চাই, এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়নপরিষদ কোটি কোটি টাকা লুটে খাচ্ছে। কিছু সংখ্যক দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকতার কারণে সরকার বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। সরকার এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছেন। সম্পূর্ন উদাসিন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনেকেই পেনসনে চলে গেছেন, অন্যরাও তেমন কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না। বিষয়টি নিয়ে বচসার এক পর্যায়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: মোস্তাফিজুর রহমান ও তার পেটুয়া বাহিনী আমাকে ও আমার প্রতিনিধিদের প্রাণনাশের হুমকীসহ মামলার হুমকী প্রদান করেন। অথচ সুপ্রীম কোর্টের পিটিশন৭২০২/২০২২ ছাড়াও আরো ৬টি পিটিশন চলমান রয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠান উক্ত গাড়ীগুলোকে সরকারকে ৫ বছরে ১৫% ভ্যাট ও ৫% ট্যাক্সসহ মোট ৮হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে ইচ্ছুক। ২০১৮ সালে আমাদের দুটি আবেদনের ভিত্তিতে ইজিবাইক চালনার নীতিমালা নির্ধারণে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানীর কথা উল্লেখ থাকলেও একটি চক্র অবৈধ পথে বাইসাইকেল কোম্পানী, কৃষিখামার ও গার্মেন্টস এর মালামাল দেখিয়ে পার্টসআমদানী করে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। বাংলাদেশেই এসব যন্ত্রাংশ তৈরী হয় বিধায় বিআরটিএ এসবকে নীতিমালার আওতায় আনতে পারছেনা। ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজদের পকেটে ঢুকছে। তিনি উল্লেখ করেন- ২০২০ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগ সিটি কর্পোরেশনকে জার আদেশ পাঠান তা সত্বেও বর্তমানে অবৈধ ভাবে এখন কয়েকটি সিনিট কর্পোরেশনের মেয়রগন যেমন রংপুর মেয়র টাকার বিনিময়ে নাম্বার প্লেট প্রদান করে যাচ্ছে। একই ঘটনা ঘটছে ব্রাহ্মনবাড়িয়া মেয়রের বেলাতেও। নিষেধাজ্ঞা স্বত্তেও জোরপূর্বক নাম্বার প্লেট বিতরন করায় সরকার রাজস্ব হারালেও তাদের পকেট ভারী হচ্ছে। তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সারা বাংলাদেশ থেকে কাজ পরিচালনা করে সরকারের তিন সংস্থা এনবিআর, বিআরটিএ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগকে ৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট ট্যাক্স প্রদানের প্রত্যয় ব্যক্ত করে সরকারের উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আলতাফ হোসেন, ডিরেক্টর মার্কেটিং আক্তার আহমেদ, আইন উপদেষ্টা জাহেদুল ইসলামসহ আরো অনেকে।