ই-পেপার | মঙ্গলবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
×

বৃষ্টির সময় যে আমলগুলো করতে হয়

ইসলামিক ডেস্ক :

মহান আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি বৃষ্টি, যা দৃষ্টিকে শীতল করে। মনের তুষ্টি ও মাটির পুষ্টিতে বৃষ্টির বড় ধরনের অবদান রয়েছে।পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য ও নিজেদের আত্মা বলিষ্ঠ করার জন্য ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের উপমা কোনো উচ্চভূমিতে অবস্থিত একটি উদ্যান, যেখানে মুষলধারে বৃষ্টি হয়, ফলে সেথায় ফলমূল জন্মে দ্বিগুণ। (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৬৫)

বৃষ্টি আল্লাহর অফুরন্ত রহমতের নিদর্শন। এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ দুনিয়ায় কল্যাণ ও রিজিকের ব্যবস্থা করেন। পবিত্র কোরআনের বহু আয়াতে বৃষ্টির উপকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। বৃষ্টি এলে মানুষের মন প্রফুল্ল হয়ে যায়। আল্লাহর রহমতে প্রকৃতিতে প্রকাশ পায় স্বস্তির ছাপ।

এর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, তোমরা যে পানি পান করো তা সম্পর্কে আমাকে জানাও, তোমরা কি সেটা মেঘ হতে নামিয়ে আনো, না আমি সেটা বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছা করলে তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবু কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো না? (সুরা : ওয়াকিয়াহ, আয়াত : ৬৮-৭০)

উপরোক্ত আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, বৃষ্টি আমাদের জন্য কত বড় নিয়ামত। তাই আমাদের উচিত বৃষ্টির সময় মহান আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করা। রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতদের বৃষ্টির সময় করণীয় কিছু আমল শিক্ষা দিয়েছেন, সেগুলো পালন করা উচিত। নিচে বৃষ্টির দিনে রাসুল (সা.)-এর কিছু আমল তুলে ধরা হলো—

অতঃপর তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাইছি। ’ যদি বর্ষা হতো তাহলে বলতেন, ‘হে আল্লাহ! বরকতপূর্ণ ও সুমিষ্ট পানি দান করুন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৯৯)

অতিবৃষ্টি থেকে বাঁচতে দোয়া : অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে আল্লাহর কাছে অতিবৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দোয়া করতে হবে। রাসুল (সা.) একবার অতিবৃষ্টির সময় মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন, ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা’। অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি বৃষ্টি আমাদের আশপাশে (জনবসতিহীন এলাকায়) বর্ষণ করো, আমাদের ওপরে নয়। (নাসায়ি, হাদিস : ১৫২৭)

বৃষ্টির সময় দোয়া করা : কেননা বৃষ্টির সময় দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, বৃষ্টির সময়ের দোয়া কবুল হয়ে থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৫৪০)

বৃষ্টির পানি স্পর্শ করা : হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম, এমন সময় বৃষ্টি নামল। তখন রাসুল (সা.) তাঁর কাপড় খুলে দিলেন। এতে বৃষ্টির পানি (তাঁর শরীরে) পৌঁছল। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! এরূপ কেন করলেন? তিনি বলেন, কেননা এটা মহান আল্লাহর কাছ থেকে আসার সময় খুবই অল্প। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৬৮)

বৃষ্টি শেষে দোয়া পড়া : বৃষ্টি শেষে রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামদের একটি বিশেষ দোয়া পড়ার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন, দোয়াটি হলো—‘মুতিরনা বিফাদলিল্লাহি ওয়া রহমাতিহ’। এর অর্থ হলো, ‘আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে। ’ (বুখারি, হাদিস : ১০৩৮)। কারণ মক্কার কাফিররা ভাবত আকাশের বিভিন্ন নক্ষত্র আমাদের বৃষ্টি দেয়। অথচ এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। রাসুল (সা.) বৃষ্টি শেষে এই দোয়া পড়ে এ কথার সাক্ষ্য দিতেন যে মহান আল্লাহই আমাদের বৃষ্টি দেন।