ই-পেপার | শুক্রবার , ৩ মে, ২০২৪
×

রহস্য পুরুষ ‘সিরাজুল ইসলাম খান ও আগামীর বাংলাদেশ’ নিয়ে জেএসডির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

‘শ্রমজীবী -কর্মজীবী-পেশাজীবী জনগণ এক হও’ স্লোগান নিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে স্বাধীনতার রূপকার রহস্য পুরুষ খ্যাত ‘সিরাজুল ইসলাম খান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বিকাল ৪ টায় চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেন মোড়স্থ ‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন’ মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আহবায়ক চট্টগ্রাম মহানগর( জেএসডি) মোজতবা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘সিরাজুল ইসলাম খান ছিলেন আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের অপ্রকাশিত মহাকাব্যের নায়ক। তিনি মাত্র দু’এক মাস আগে গত ৯ জুন পরলোক গমন করেন। রাজনৈতিক আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে তার গোপন সংগঠন ‘নিউক্লিয়াস’ গঠন। তিনি ছিলেন ছয় দফা ও এগারো দফার আন্দোলন, পতাকা উত্তোলন, ইশতেহার পাঠ ও অসহযোগ আন্দোলনসহ ‘৭১ -এর পট পরিবর্তনের প্রস্তুতিমূলক কর্মমুখর ইতিহাস ও সফল বাস্তবায়নের কারিগর। আমাদের স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন-সংগ্রামকে ধাপে ধাপে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের দিকে ধাবিত করার উচ্চতর রণনীতি, রণকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে তার দক্ষতা, সাহস ও সুদূরপ্রসারী ভূমিকা ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে সোনার অক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে’।

‘সিরাজুল আলম খান স্বাধীনতাকে যেমন অনিবার্য করে তুলেছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশকে বিনির্মাণের প্রশ্নেও তেমনি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রস্তাবনা তিনি হাজির করেছিলেন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সুকঠিন জাতীয় ঐক্য ভেঙে ১৯৭২ সালে ‘জাতীয় বিপ্লবী সরকার’ গঠনের পরিবর্তে এদেশে দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা হলো।
এতে করে সকলের মনে জাতীয় জীবনে অবিশ্বাসের বীজ রোপিত হয়। ঔপনিবেশিক নিপীড়নমূলক শাসন ব্যবস্থা পুনর্বহালের মতাদর্শ, নীতি-চিন্তা এবং চর্চার বিরুদ্ধে একমাত্র বাঙালি সাহসী সিরাজুল আলম খান বঙ্গবন্ধুর নিকট ১৫ দফা উত্থাপন করেছিলেন।

এটাই ছিল স্বাধীন বাংলাদেশে ব্রিটিশ প্রণীত ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিদ্রোহ। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিরোধী দল ‘জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেসডি)’র আত্মপ্রকাশ ঘটে’।

এদিকে বিশেষ আলোচকের বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার প্রশাসনিক কাঠামো অক্ষত রেখে ‘৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। সেই সংবিধান কেবল ত্রুটিপূর্ণই নয়; স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সশস্ত্র যুদ্ধের চেতনার পরিপূর্ণ প্রতিফলন তাতে ঘটেনি, আড়াল করা হয় মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে। এই বিষয়টি সর্বপ্রথম চিহ্নিত করেন স্বাধীনতার রূপকার সিরাজুল আলম খান। সূচনালগ্নের সেই ত্রুটির ধারাবাহিকতায়ই আজকের বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংবিধান ও দলীয় গণতন্ত্রের নামে রক্তাক্ত অধ্যায়ের পর অধ্যায় রচিত হচ্ছে ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে।

১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত যেভাবে লুটপাট চলেছিল তারই ধারাবাহিকতায় আজকে দেশে লুটপাট চলছে, এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ১৫ লক্ষ কোটি টাকা দেশের বাহিরে পাচার হয়েছে, তাদের চাটুকার ব্যবসায়ীরা লোনের নামে ব্যাংক লুট করছে। একনায়কতন্ত্র বাস্তবায়ন করে আজ গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে ফেলছে শেখ হাসিনার সরকার’।

‘কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের কারণে বাংলাদেশের নিরাপত্তা আজ চরম হুমকির মুখে। নির্বাচনবিহীন ও বৈধতার সংকটে বিপর্যন্ত এই আওয়ামী সরকার-রাষ্ট্র পরিচালনায় অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও ভূ-রাজনীতিতে চরম ঝুঁকিতে পড়বে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান, সরকারের পতন ও রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে আমুল সংস্কারের লক্ষ্য নিয়ে আমাদের যুগপৎ আন্দোলন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে এই আন্দোলনে ব্যাপক গণজাগরণের সূত্রপাত হয়েছে। চলমান গণজাগরণকে গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হবে। এই সৈরাচারী সরকারের পতন এরশাদের চেয়েও খারাপ হবে’।

এতে উপস্থিত ছিলেন, জেএসডি কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারণ সম্মাপদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ সপন, সদস্য জবিউল হোসেন, সহসভাপতি মির্জা মুহাম্মদ আকবর, তথ্য,বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ক্যাপ্টেন শহীদ উদ্দীন মাহমুদ, উপদেষ্টা আব্দুল মান্নান, চট্টগ্রাম কলেজের সাবেক ভিপি ডাঃ আইনুল হক ও আহবায়ক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ( জেএসডি) অধ্যাপক ইসহাক চৌধুরী প্রমুখ।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত রিপোর্ট