ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২ মে, ২০২৪
×

চট্টগ্রামবাসী লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়-খোরশেদ আলম সুজন

চট্টগ্রামবাসী লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায় বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। বিদ্যুতের গ্রাহক ভোগান্তির বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আজ বুধবার (২৬ জুলাই ২০২৩ইং) সকালে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম’র প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম এর সাথে তাঁর দফতরে মতবিনিময় করতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় সুজন বলেন চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক হৃদপিন্ড। বন্দর, কাস্টম, ইপিজেড, জ্বালানি তেল শোধনাগার, সার কারখানা, শিপব্রেকিং, স্টিল ও আয়রন শিল্প, জাহাজ নির্মাণ, পোশাক শিল্পসহ নানাবিধ ভারী, মাঝারি ও ছোট শিল্পকারখানা চট্টগ্রামে অবস্থিত। এসব শিল্পে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উপর বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভর করে। চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে, তাই জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহেরও অনুরোধ জানান তিনি। তিনি আরো বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগনের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করছেন। তার পরেও বিদ্যুতের ভোগান্তি সর্ষের মধ্যে ভূত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখারও আহবান জানান তিনি। দেখা যাচ্ছে যে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং করার কথা থাকলেও নির্দেশনা না মেনে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

তাছাড়া বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্যও নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় একাধিকবার লোডশেডিংয়ের কারণে জনগনের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া এবং অত্যধিক গরমে অসুস্থতা বেড়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল এবং চিকিৎসাকেন্দ্রও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মধ্যে পড়ছে। ফলত বিভিন্ন রোগে অসুস্থ রোগীরাও ভোগান্তিতে পড়ছেন। এছাড়া নিউমুরিং বিতরণ বিভাগ প্রায়শই গ্রাহকের সাথে দুর্ব্যবহার করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পের ফলে গ্রাহক হয়রানি কমার পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগও লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। কিন্তু নগরীর অধিকাংশ এলাকা এখনো প্রিপেইড মিটারের আওতার বাহিরে। ফলত গ্রাহকগণ গড়বিল নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন।

গ্রাহকের ভোগান্তি নিরসনে অতিসত্বর পুরো নগরীকে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সুফল যাতে জনগন ভোগ করতে পারে সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে নাগরিক উদ্যোগ। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ এসব সমস্যা সমাধানে বিউবো প্রধান প্রকৌশলীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন খোরশেদ আলম সুজন। বিউবো’র প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দকে বিদ্যুৎ অফিসে স্বাগত জানান। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একক পদক্ষেপের কারণে সারা দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন অনেকাংশে বেড়েছে। ফলত বিদ্যুতের ব্যাপক চাহিদা বাড়লেও জনগন পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছে। তবে হঠাৎ করেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধটি সারা বিশ^কে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও এ পরিস্থিতির শিকার। জ¦ালানি তেল, গ্যাস ও কয়লার মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া কয়েকদিন ধরে অত্যধিক গরমের ফলে বিদ্যুতের চাহিদা অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। এর মাঝেও বিদ্যুৎ বিভাগ জনগনকে ২৪ ঘন্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি নগরীর কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য গ্রাহকদের নিকট দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন চট্টগ্রামের বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেকাংশে কম। যার ফলে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সরবরাহের উপর নির্ভর করতে হয়। আগামী আগস্টের মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টটি সম্পূর্ণরূপে উৎপাদনে যাবে। এটি চালু হলে চট্টগ্রামবাসীর বিদ্যুতের সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। নাগরিক উদ্যোগ উত্থাপিত অন্যান্য সমস্যাগুলোও দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান করেন বিউবো প্রধান প্রকৌশলী। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, সংগঠনের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মো. শাহজাহান, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, সাহেদ বশর, সমীর মহাজন লিটন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম ইমরান হাসান আহাম্মেদ ইমু, মো. কাইয়ুম, শুভ চক্রবর্ত্তী প্রমূখ।