ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২ মে, ২০২৪
×

পৈতৃক বসত ভিটা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাস্থ ‘গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটি’র নামে চাঁদাবাজি, পৈতৃক বসত ভিটা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা, মিথ্যা মামলাসহ নারীর শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ভুক্তভোগী পরিবার। এতে সমিতির প্রধান উপদেষ্টা দিদারুল আলম চৌধুরী, সভাপতি মুহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক কাউছারকে অভিযুক্ত করা হয়। ১০ জুলাই (রোববার) বিকাল ৪ টায়,চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ভবনের এস.রহমান হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেললে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী পরিবারের মিনুয়ারা বেগম বলেন, আজ আমি জায়গা- জমি সংক্রান্ত কোন বিষয়ে আপনাদের সামনে হাজির হইনি। হাজির হয়েছি বেশ কিছু দখলবাজের মুখোশ উন্মোচন করতে যারা মূলত জায়গা জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে ভূমিদস্যুতায় লিপ্ত। অসহায় পরিবার পেলে যারা হামলা ও চালায় নির্যাতন। পৈতৃক বসত ভিটায় শান্তিপূর্ণ বসবাসের অধিকার সকল সাধারণ নাগরিকের আছে, কিন্তু সে অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে একই এলাকার দিদারুল আলম ভূমিদস্যু গংরা,করছে হামলা ও নির্যাতন আমি তার প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করছি।

আমরা পিতাহারা সন্তানরা আজ এক হয়ে আপনাদের দ্বারস্থ হয়েছি। উল্লেখ্য, আমি, আমার পরিবার ও একমাত্র ভাই মোঃ জাহেদ হাসানসহ উপরোক্ত ঠিকানায় পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ২০ শতক সম্পত্তিতে দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। ৪টি দলিল মূলে খরিদা সূত্রে আমার পিতার রেজিষ্ট্রার্ড নামজারী খতিয়ান আছে পরবর্তীতে পিতার মৃত্যুর পর ওয়ারিশান সূত্রে আমরা তপশীলোক্ত সম্পত্তির মালিক সত্ববান হয়ে সরকারী খাজনাদি পরিশোধ করে ভোগ দখলে স্থিত থাকলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিগণ নানা উপায়ে আমাদের বসতভিটাসহ জায়গা দখলের পায়তারা করে আসছে। এক ভাই ছাড়া আমাদের পরিবারের সকলেই নারী সদস্য হওয়ায় তার সুযোগ নিয়ে নানাভাবে হয়রানি করছে এই দিদার ও তার বাহিনী।

প্রথমদিকে নামসর্বস্ব ‘গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটি’নামীয় তথাকথিত রেজিষ্ট্রেশনবিহীন সমিতির নামে চাঁদা দাবি করতে থাকে, পরে সমিতির অফিসের জায়গা দাবী করে আমাদের নিজস্ব জায়গা তাদের বুঝাই দিতে হবে বলে বিবাদীগণ নানান সময়ে আমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে, কিন্তু তার বিপরীতে তারা কখনো কোন আইনগত কাগজপত্র দেখাইতে পারে নাই। ১নং বিবাদী তথাকথিত সমিতি কিংবা গরীবুল্লাহ শাহ হাউজিং সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা বলে নিজেকে পরিচয় দেয়। এবং তার নির্দেশে তথাকথিত সভাপতি ২নং বিবাদী মহিউদ্দিন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক ৩নং বিবাদী মোঃ কাউছার গত ১৬ জুন’২৩ ইং জোরপূর্বক আমাদের বসতভিটায় সাইনবোর্ড লাগানোর চেষ্টা করে।

এবং আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের গাল-মন্দ করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়া যায় তারা । ইতিমধ্যে আমি এ নিয়ে একটি জিডিও করেছি, যার নং- খুলশী থানা- ২১৪৪। জিডির ঘটনা জানতর পেরে তারা ১০ দিনের মাথায় এরপর উলটো আমাদের জায়গাতে নিজেরাই চুরি করেছি উল্লেখ করে থানা পুলিশকে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার এক মাত্র ভাইসহ আমাদের বোনেদের নামে মামলা করে।

বিবাদীগণ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এবং পরবর্তীতে গত ৮ জুলাই’২৩ ইং সকাল ৮ টার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জন স্বশস্ত্র অজ্ঞাত লোকজন নিয়ে এসে পরিষ্কার করার নামে অবস্থান নেয়। এবং অবৈধভাবে দখলের চেষ্টায় লিপ্ত থেকে তারা বিভিন্ন ফলজ গাছ কেটে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটায়। দেয়াল ভেঙ্গে ফেলে ও রাত ১ টার দিকে অবৈধভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়। এবং জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ চালাতে থাকে।

এ ঘটনার পয় বারবার আমরা ৯৯৯ নম্বরে থানাকে জানালে থানা পুলিশ কার্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর একইভাবে গত ৯ জুলাই ২৩ইং তারিখে পুনরায় নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখে দখলের চেষ্টা করলে, আমরা নর্থ জোনের ডিসি মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করলে থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে ১ নং বিবাদীর নেতৃত্বে অন্য বিবাদীগণও অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনের ভাড়াটে দলবল নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই স্বশস্ত্র হামলা চালিয়ে আমাদের পরিবারের নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানীসহ হত্যার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকজনকে জখম করে। যার ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে বিদ্যমান। পরবর্তীতে পুলিশ চলে গেলে তারা পুনরায় দখলের উদ্দেশ্যে স্বশস্ত্র মহড়া ও অবস্থান করে আছে এখনো, যাতে আমি, আমার পরিবার ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।

এই বিষয়ে, মাননীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী, পুলিশ কমিশনার, আইজিপি মহোদয়, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক আপনাদের সাংবাদিকদের বলতে চাই আপনারা এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করে সংবাদ পরিবেশন করে জাতির কাছে তুলে ধরবেন। আমাদেরকে এইসব দখল বাজদের হাত থেকে রেহাই পেতে সহযোগিতা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাহিদ হাসান, নিলুপা বেগম,ফেরদৌস মুক্তা ,মুনমুন ফাতেমা,দিলওয়ারা বেগম
প্রমুখ।