ঢাকা অফিস :
“আমরা আশাবাদী বাপেক্স তার কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করবে। বাপেক্স তার দক্ষতা দেখাতে না পারলে টিকে থাকতে পারবে না”, বলেন নসরুল হামিদ।
অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে গ্যাস অনুসন্ধান বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, “এই কাজ করতে না পারলে রাষ্ট্রীয় অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সও টিকতে পারবে না। আমরা আশাবাদী যে বাপেক্স তার সরকার্যক্রম আরও শক্তিশালী করবে। বাপেক্স তার দক্ষতা দেখাতে না পারলে টিকে থাকতে পারবে না।
“বাংলাদেশে এই মুহূর্তে প্রতিদিন আরো ১ হাজার এমএমসিএফ গ্যাস প্রয়োজন। দেশীয় ফিল্ড থেকে গ্যাস পেলে প্রতি ইউনিটে ৪ টাকা খরচ হয়। একই পরিমাণ গ্যাস আমদানি করতে ৬০ টাকা খরচ হয়। এত টাকা কোত্থেকে দেবে সরকার? মাত্র ২৩ শতাংশ গ্যাস আমদানি করি। এই অর্থ যদি বাঁচাতে পারি তা হবে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি।”
শনিবার অনুসন্ধান কূপ কৈলাশটিলা-৮ খনন প্রকল্প পরিদর্শন অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
কৈলাশটিলা ফিল্ডে আরো ১ দশমিক ৬ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগামী চার মাসের মধ্যে খনন শেষ হলে এবিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
গ্যাস অনুসন্ধান বাড়াতে এ বছর থেকেই কাজ শুরু করার কথা জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, “আরো ১০০টি কূপ খননের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামী দুই বছরে আরো ৬০০ থেকে ৬৫০ এমএমসিএফ গ্যাস যুক্ত করতে চাই।”
কৈলাশটিলা-৮ কূপের খনন কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি। ১২০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির এই কূপটি খনন করছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। কূপের মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে বিদ্যমান পাইপলাইন ও আড়াই কিলোমিটার দূরত্বে ব্যবহার যোগ্য প্রসেস প্লান্ট রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কৈলাশটিলা ফিল্ডে আগে ৩ টিসিএফ মজুদ ছিল। অনুসন্ধান কূপ খনন করায় মজুদ আরও ১ দশমিক ৬ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যাবে। কয়েক মাসের মধ্যে এই গ্যাস পাইপলাইনে নিয়ে আসতে পারব।
সকালে জালালাবাদ গ্যাম ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন ও প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের ডাটা সেন্টার উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। তিন দিনের সফরে সিলেটে রয়েছেন তিনি। এই সময়ে গ্যাস ফিল্ড ও প্রসেস প্লান্ট পরিদর্শন, মডেল পেট্রোল পাম্প উদ্বোধন, পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ উদ্বোধনের কর্মসূচি রয়েছে তার হাতে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা উদ্যোগ নেবেন, আমরা সেই অপেক্ষায় বসে থাকি। মন্ত্রণালয় কোনো প্রকল্প গ্রহণ করে না। আমরা চাই প্রত্যেকে সক্ষমতা দেখাক, আমরা তাদের সক্ষমতার দিকটি দেখতে চাই। যারা ভালো করবে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। সিলেট গ্যাস ফিল্ড এগিয়ে গেছে, আরো প্রকল্প নিচ্ছে। বাপেক্স ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড পিছিয়ে আছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, “কৈলাশটিলায় এর আগে সাতটি কূপ খনন করা হয়েছে। প্রতিটা কূপেই গ্যাস পাওয়া গেছে। সাড়ে ৩ হাজার মিটার খনন করা হবে। এক টিসিএফের ওপরে গ্যাস পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।”
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কৈলাশটিলা-৮ কূপ খনন প্রকল্প পরিদর্শনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
