ই-পেপার | সোমবার , ৬ মে, ২০২৪
×

জর্ডানে ৩ মার্কিন সেনা হত্যার অভিযোগ অস্বীকার ইরানের

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক ::

সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের টাওয়ার ২২ এলাকায় ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনাকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। তেহরান বলছে, এ ঘটনায় আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।এমনকি কিছু করারও নেই।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

খবরে বলা হয়েছে, জর্ডানে ড্রোন হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন তারা মার্কিন সেনা। তা ছাড়া কয়েকডজন মানুষ হামলার ঘটনায় আহত হয়েছে।

হামলার এক ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ক্যামেরন নিন্দা প্রকাশ করেছে। তারা রোববারের এ হামলায় ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছেন।

বাইডেন বলেছেন, ঘটনাটি ঘৃণ্য ও সম্পূর্ণ অন্যায় আক্রমণ। এ ঘটনার জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করা হবে বলেও তিনি অঙ্গীকার করেছেন।

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, যেমন আমরা আগে স্পষ্টভাবে বলেছি, এই অঞ্চলের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো শিশু-হত্যাকারী ইহুদিবাদী শাসকদের যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার [প্রতি] প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। তারা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের নির্দেশ গ্রহণ করে না।

সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আইআরএনএকে এ কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি। তিনি আরও বলেন, সিরিয়া সীমান্তবর্তী গোষ্ঠীগুলো তাদের নিজস্ব নীতি ও অগ্রাধিকারের পাশাপাশি তাদের দেশ এবং জনগণের স্বার্থের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়। সে হিসেবে তারা কাজ করে। হামলার ঘটনায় ইরানের সম্পৃক্ততা নিয়ে যে দাবিগুলো করা হচ্ছে তা এ অঞ্চলের বাস্তবতাকে উল্টে দেওয়ার জন্য ‘নির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য’ দ্বারা অনুপ্রাণিত। শিশু-হত্যাকারী ইহুদিবাদী শাসনসহ তৃতীয় পক্ষ দ্বারা এটি প্রভাবিত হয়েছিল।

জাতিসংঘে ইরানের মিশনও আইআরএনএকে উদ্ধৃত করে এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলার সঙ্গে তেহরানের ‘কোনো সম্পর্ক নেই ও কিছু করার নেই’। সিরিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষই এর জন্য দায়ী।

এদিকে, দ্য ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক নামে ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি ছাতা সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করেছে।

রোববার গভীর রাতে জর্ডানের টাওয়ার ২২ এলাকায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। এলাকাটি মূলত একটি লজিস্টিক সাপোর্ট বেস। সেখানে ওয়ানওয়ে ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়। উল্লেখ্য, ওয়ানওয়ে ড্রোনে বিস্ফোরক থাকে। যেটি লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের দাবি, ড্রোনটি ইরান-সমর্থিত কোনো মিলিশিয়া গোষ্ঠী ছুড়েছে এবং এটি সিরিয়া থেকে ছোড়া হয়েছে। কোন মিলিশিয়া গোষ্ঠী হামলাটি করেছে তার অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।  

ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড রোববার নিশ্চিত করেছে, উত্তরপূর্ব জর্ডানের একটি ঘাঁটিতে একমুখী ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এতে তিন সেনা সদস্য নিহত এবং কমপক্ষে ৩৪ জন আহত হয়েছেন।  

এদের মধ্যে গুরুতর আহত আটজনকে উন্নতর চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ফিলিস্তিনে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো কোনো হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। জর্ডানে এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের গুরুতর বিষয় হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।