ই-পেপার | শুক্রবার , ২৯ মার্চ, ২০২৪
×

পাহাড়ের দেশ রাঙামাটিতে এক পশলা স্বস্তির বৃষ্টি

তীব্র গরম আর বৈদ্যুতিক লোডশেডিংয়ের হাঁসফাঁস করা অবস্থার মধ্যে বুধবার রাতে অবশেষে পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। শীতল হাওয়াসহ এ বৃষ্টিপাতের স্থায়িত্ব ছিলো প্রায় পৌনে এক ঘন্টা।

রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নিয়ন্ত্রণে সর্বমোট বিদ্যুৎ গ্রাহক ৭০ হাজার। । তার মধ্যে সদরের গ্রাহকের সংখ্যা ৩২ হাজার। গ্রাহকরা কমবেশি সর্বমোট প্রতি দিন ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। সেখানে বর্তমানে সরবরাহ পাচ্ছে মাত্র ৫/৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ । গড়ে ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাচ্ছে পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটির মানুষ। চাহিদার তুলনায় যা খুবই সামান্য। যে কারণে ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিংয়ের মতো বিড়ম্বনা চেপে বসেছে গ্রাহকদের উপর। মারাত্মকভাবে কষ্ট পাচ্ছে রোগী, শিশু ও বৃদ্ধ মানুষ। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ায়ও বিঘ্ন ঘটছে। প্রযুক্তির ব্যবহার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরে পাহাড়ের মানুষ তীব্র গরম আর লোডশেডিং মোকাবেলা করে চরম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ কম পাবার কারণে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগকেও ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। গ্রাহকগণ মুঠোফোনে খোদ নির্বাহী প্রকৌশলীর ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছে। তেমনটি জানালেন, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুর রহমান।

বুধবার (৩১ মে) রাত ৮ টা ৫ মিনিট থেকে শুরু হওয়া এই স্বস্তির বৃষ্টি আশা জাগাচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের জলে ফুলে ফেঁপে টইটুম্বুর হবার। এই মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে যতটা পানি থাকার কথা, ততোটা নেই। হ্রদের পানি এখনো ৮০ এমএসএল’র নিচে রয়েছে। সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ায় বিগত ২০২১সালের এই সময়ে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১৬ টি স্পিলওয়ে খুলে দিয়ে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিতে হয়েছে।

অথচ উচ্চ আদালতের রায় অমান্য করে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় হ্রদের তলদেশ থেকে প্রভাবশালী কর্তৃক বালি উত্তোলনের কারণে ২০২২ সাল থেকে চলতি মৌসুম পর্যন্ত এসমস্যা চলছে। কর্ণফুলী নদীর উজান অর্থাৎ ভারত থেকে আশানুরূপ পানিও নামেনি। হয়নি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত। যে কারণে কাপ্তাই হ্রদে এ সময়ে যে পরিমাণ পানি থাকার কথা, সেই পরিমাণ পানি নেই। মাঝারি ধরনের স্বস্তির এই বৃষ্টিপাত স্থায়ী ছিলো, মাত্র ৪৫ মিনিট।

নিউ রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি’র যুগ্ম সম্পাদক মো. আব্দুল শুক্কুর বলেন, রাঙামাটিতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হলে, বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হবে।কাপ্তাই হ্রদের রূপালী সোনা খ্যাত মৎস্য সম্পদ আরও কমে যাবে। নাব্যতা হারা কাপ্তাই হ্রদ হয়ে ওঠবে মরা গাঙ। পৌনে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে কিছুই হবে না। তারপরও
এই বৃষ্টি আল্লাহর রহমত। হ্রদ নির্ভর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্য ও জীবনযাত্রার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে যোগ করেন এ ব্যবসায়ী নেতা।