ই-পেপার | শুক্রবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
×

‘মোখা’মোকাবেলায় পাহাড়ি জেলায় আগাম প্রস্তুতি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় মোখা’র প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত ও পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে রাঙামাটিতে। অথচ শনিবার (১৩মে) বিকেল পর্যন্ত এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য যাচ্ছে না । জেলা প্রশাসনের তরফে আগাম প্রস্তুতিমূলক ২১টি আশ্রয়ান কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পুলিশ গ্রহন জারি করেছে ১৫ টি সতর্কতা মূলক নির্দেশনা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন লোকজন আশ্রয়ান কেন্দ্রে যায়নি।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসক মো: মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা জরুরি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি মারফত “বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ রবিবার যেকোনো সময়ে স্থলভাগে আঘাতহানতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায়ও প্রবল বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধ্বসের আশংকা করা হয়েছে।

এতে জেলার পাহাড়ের ঢালে ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী সকল লোকজনকে প্রবল বর্ষণ শুরু হওয়ার সাথে সাথেই নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। সেই লক্ষ্যে শনিবার (১৩ মে) বিকেল ৪ টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে সকল ধরণের নৌ চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। একইভাবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় মানুষের জীবন ও সম্পদের সুরক্ষায় সরকারি কর্মকর্তা – কর্মচারীদের পাশাপাশি সর্বসাধারণকে সহযোগিতা প্রদানের জন্যও অনুরোধ করার আহ্বান জানানো হয়। যে কোন জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম।

অরূপভাবে শনিবার (১৩ মে) সকাল ১১ টায় ঘূর্ণিঝড় “মোখা” মোকাবেলায় জেলা পুলিশের করণীয় সম্পর্কে পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ’র সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে এক জরুরি বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় জেলাবাসীর জানমালের নিরাপত্তায় প্রাকৃতিক এই মহাদুর্যোগে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিবারণ, ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে উদ্ধার, রাস্তাঘাটে ভেঙে পড়া গাছপালা অপসারণসহ সার্বিক বিষয় এবং পুলিশ সদস্যদের নিজেদের ব্যক্তি নিরাপত্তা ও সরকারি সম্পদ সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার বিষয়ে ১৫ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়।

জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ’র উদ্যোগে ঘুর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় আগাম সতর্কতামূলক প্রত্ততি গ্রহণ করেছে। জেলা প্রশাসনের ২১টি আশ্রয়ান কেন্দ্র হলো, শহীদ আব্দুল আলী একাডেমী, রিজার্ভ বাজার নিউ রাঙামাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাঙামাটি শিশু একাডেমী, রাঙামটি শিশু নিকেতন, রাঙামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,পানি উন্নয়ন বোর্ড রেষ্ট হাউজ, ওমনামিয়া ছিল পৌর জুনিয়র হাই স্কুল, ডিয়ার পার্ক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বর্ণটিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,রাঙামাটি যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র,উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক ভবন, ভেদভেদি পৌর মুনিয়র হাই স্কুল, বিএম ইনস্টিটিউট, মনোঘর ভাবনা কেন্দ্র, বিএডিসি অফিস ভবন, লোকনাথ মন্দির, আলুটিলা রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যাল, উলুছড়া উপগুপ্ত বনবিহার, কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, রাণী য়ামী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ওগোধুলী আমানতবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এইসব আশ্রয়ান কেন্দ্রে এখনো কোন লোকজন আশ্রয় নেয়নি।

এনডিসি মো: এনামুল হাসান বলেন, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করে লোকজন আশ্রয়ান কেন্দ্রে পৌছুতে শুরু করবে। আমারা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ঝুঁকি এড়াতে কাপ্তাই হ্রদে সকল প্রকার নৌ-যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।