ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
×

সিএমসিসিআই’র উদ্যোগে প্রাক-বাজেট’২৩-২৪ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

আজ ১৬ মার্চ ২০২৩ ইং রোজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির (সিএমসিসিআই) উদ্যোগে প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা ২০২৩-২০২৪ হোটেল আগ্রাবাদ (কর্ণফুলী হল) এ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান জনাব আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো: মাসুদ সাদিক, সদস্য, গ্রেড-১ (কাস্টমস নীতি), ড. সামস উদ্দিন আহমেদ সদস্য, গ্রেড-১ (আয়কর নীতি), মিজ জাকিয়া সুলতানা, সদস্য, গ্রেড-১,( মূসক নীতি)।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সিএমসিসিআই সহ সভাপতি জনাব এ.এম. মাহবুব চৌধুরী, পরিচালক জনাব প্রফেসর জাহাঙ্গীর চৌধুরী, হাজী এম. এ. মালেক, মো: শফি, এম সোলায়মান, এফসিএমএ, অজিত কুমার দাশ এবং জিরি সুবেদার গ্রুপের এম.ডি, ওয়াহিদ ফেরদৌস সহ অসংখ্য সদস্য এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিবৃন্দ। জনাব খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। সিএমসিসিআই’র পক্ষে সূচনা বক্তব্য পাঠ করেন জনাব খলিলুর রহমান। এরপর সিএমসিসিআই সহ-সভাপতি জনাব এ.এম. মাহবুব চৌধুরী বিস্তারিত বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন। সিএমসিসিআই সদস্য সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের বিস্তারিত বক্তব্যের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান তার বক্তব্য পেশ করেন। সিএমসিসিআই সভাপতি জনাব খলিলুর রহমানের লিখিত বক্তব্য

উপস্থিত বাংলাদেশ সরকারের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান জনাব আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য:-১) জনাব মো: মাসুদ সাদিক, সদস্য (শুল্ক নীতি)২) ড. সামস উদ্দিন আহমেদ, সদস্য (কর নীতি)৩) মিস জাকিয়া সুলতানা, সদস্য (মূসক নীতি) সহ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ, উপস্থিত চট্টগ্রামস্থ কাস্টমস, কাস্টমস বন্ড, ভ্যাট এবং আয়কর বিভাগের সম্মানিত কমিশনারবৃন্দ। সিএমসিসিআই,এর সহ-সভাপতি, পরিচালক ও সদস্যবৃন্দ, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ-

সিএমসিসিআই বলেন,চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাননীয় চেয়ারম্যান শত কর্ম ব্যস্ততার মাঝেও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২০২৩-২০২৪ জাতীয় বাজেট নিয়ে মত বিনিময়ের জন্য আমাদের মাঝে উপস্থিত হওয়ায় কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। মহান স্বাধীনতার মাস মার্চ। মহান এই স্বাধীনতার মাসে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী বীর শহীদদের। সালাম জানাই সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন আমি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পরেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে উন্নয়নের মহোৎসব। অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, মানব সম্পদ উন্নয়ন, প্রযুক্তি, খেলাধূলা, পর্যটন, সমুদ্র অর্থনীতি, বিদ্যুৎ-জ¦ালানী ইত্যাদি সর্ব ক্ষেত্রেই সাফল্যের সাথে উন্নয়ন করে চলেছেন। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মান ছাড়াও আরও যে সকল উন্নয়নমূখী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে তা কার্যকর হলে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধি করবে বলে আমি বিশ^াস করি। এ ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সহ বিদেশেও দেশের ভাবমূর্তি আরও উচ্চতর শিখরে নিয়ে যাবে।

বর্তমান পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হলেও বর্তমান সরকারের দৃঢ়, সাহসী ও যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সচল রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারী পরবর্তী, রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ^ অর্থনৈতিক মন্দার প্রেক্ষিতে জিনিস পত্রের দাম বেড়েই চলছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে দেশের সাধারণ জনগনের উপর। এমন পরিস্থিতির মাঝে কিছু দিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। এমন অবস্থায় আমদানী পণ্যের শুল্ক সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সাথে কোন ব্যবসায়ী যাতে অধিক মুনাফা লাভের আশায় পণ্য মূল্যের অযৌক্তিক দাম বাড়িয়ে দেশের জনগনকে ভোগান্তিতে না ফেলে তার জন্য আমি আপনার মাধ্যমে তাদের সীমিত লাভে পণ্য ছাড়ের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হল শিল্প উন্নয়ন। রপ্তাণী খাতে বাংলাদেশের পোষাক শিল্প দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। করোনা পরবর্তী এবং চলমান রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অন্যান্য শিল্পের মত এই শিল্পও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই এই শিল্পের ক্ষতি হতে উত্তরণে অন্যান্য বিষয়ের সাথে সাথে কর ও শুল্ক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কতিপয় পরিবর্তন /পরিবর্ধন আবশ্যক বলে আমি মনে করি:

আমদানিকৃত উপকরণের ক্ষেত্রে অগ্রিম কর (AT) শূন্য হারে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ২ (দুই) শতাংশ হারে পূণঃ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো (ICD) খাতের করহার ৮% হতে কমিয়ে ২% হারে হ্রাস করণ, যাহা ৮২সি ধারায় নূন্যতম কর হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাত রেডিমেড গার্মেন্টসের আয়ের উপর উৎসে কর হার ১% হতে হ্রাস করে ০.৩০% ধার্যকরণ (যাহা নূন্যতম কর ধারার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ)। কোম্পানী আইনের ৩৫ ধারা বিধান মোতাবেক কোম্পানির কর নির্ধারণ অডিট রিপোর্টকে তথ্যের চুড়ান্ত এবং সর্বাগ্র উৎস হিসেবে প্রাধান্য/সর্বাধিকার প্রদান করণ।ধারা ৮৪ মোতাবেক অনুমান নির্ভর কর ধার্য বন্ধ করণ। প্রাইভেট আইসিডির ক্ষেত্রে ভারী সরঞ্জাম বা মেটেরিয়াল হ্যান্ডেলিং ডিভাইস (Conveyors, Lifting or Handling equipment, Forklifts, Palletizers –Depalletizers, Overloads trolleys, Automatic labeling machine)) ইত্যাদী সামগ্রী আমদানি শুল্কের হার হ্রাস করণের প্রস্তাব করছি।

পরিশেষে আমি সকলকে পবিত্র রমজানের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি। এখন আমি অত্র চেম্বারের সহ সভাপতি জনাব এ এম মাহবুব চৌধুরী সাহেবকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের বাজেট প্রস্তাবের কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বিশদ বক্তব্য রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত রিপোর্ট