ই-পেপার | শুক্রবার , ২৯ মার্চ, ২০২৪
×

পেকুয়ায় লোনা পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ ১২০ হেক্টর আমন ধানের ক্ষেত

পেকুয়ায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং চলে গেলেও রেখে গেছে তার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। ঘূর্ণিঝড়ের ২২ দিন পেরুলেও কৃষকের মুখে এখনো ফুটেনি হাসি বরং দেখা গেছে চরম দুর্দশার চিত্র। ঘুর্ণিঝড়ে বেঁিড়বাধ ভেঙে ও বেড়িঁবাধ উপছে পড়ে লোনা পানি ঢুকে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ৬টি গ্রামে ১২০ হেক্টর আমন ধানের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পেকুয়া সদর ইউনিয়নের পশ্চিম গোঁয়াখালী দিয়াপাড়া, বটতলিয়া পাড়া, বকসো চোকিদার পাড়া, বারবাকিয়া ইউনিয়নের জালিয়াকাটা, নোয়াখালী পাড়া, বুধামাঝির ঘোনা, রাজাখালী ইউপির দশের ঘোনা, মাঝির পাড়া আমিলা পাড়ায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ধান নষ্ট হয়েছে শুধু নয় ধানের গাছও লবণ পানিতে পুড়ে গেছে।
রাজাখালীর দশের ঘোনা এলাকার কৃষক দিল মোহাম্মদ বলেন, আমি দুই কানি আমন ধানের চাষ করেছিলাম ঘূর্ণিঝড়ের দিন লোনা পানি প্রবেশ করে আমার দুইকানি ধানের ক্ষেত সব শেষ এবং কি ধানের গাছ পর্যন্ত শেষ হয়ে গেছে।

সদর ইউনিয়নের বকসোচোকিদার পাড়ার কৃষক রমিজ আহম্মদ বলেন, আমার সব সম্বল শেষ হয়ে গেছে আমি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দুই একর জমিতে চাষাবাদ করি কিন্ত লবণ পানিতে সব ধান শেষ কিছুই অবশিষ্ঠ নেই। আমার এখন প্রায় ব্যাংকে এক লক্ষ টাকা দেন।

সদরের জালিয়াখালী গ্রামের কৃষাণী মুস্তা খাতুন বলেন, আমি দুই কানি জমিতে চাষাবাদ করেছি যেখানে ২ কেজি ধান ও পাবো না। সব লোনা পানিতে জ¦লে গেছে। তিনি বলেন ১০ হাজার টাকা করে লাগিয়ত নিয়েছি এই জমি, এখন আমি কোথায় যাবো ছেলে মেয়ে নিয়ে কি খাবো? তিনি সরকারের সহযোগীতা ও কামনা করেন।

একইভাবে বারবাকিয়া জালিয়াকাটা এলাকার চাষিরাও তাদের ব্যাপক ক্ষতির কথা জানান এবং চেয়ারম্যান মেম্বারদের গাফেলতির কারনে বেড়িবাঁধ দিয়ে লবণ পানি ঢুকেছে বলেও অভিযোগ করেন। তারা বলেন, যেভাবে আমাদের ক্ষতি হয়েছে তাতে মনে হয় সামনে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে।

পেকুয়া সদর ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল আজিম বলেন,আমার ওয়ার্ডের পুরো এলাকা বেড়িবাঁধ ভেঙে লোনা পানিতে প্লাবিত হয়েছিল যার ফলে আমন ধান প্রায় সব পঁচে গেছে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এনে ক্ষতিগ্রস্থ ধানের ক্ষেত দেখিয়েছি আশা করি ওনারা ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে কৃষক বাচাঁও আন্দোলনের নেতা ও স্থাণীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বারেক বলেন, এই ঘুর্ণিঝড়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে একদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় দেরিতে চাষাবাদ অন্য দিকে ঘূর্ণিঝড়ে লোনা পানি সব মিলে কৃষককের এই ক্ষতি অপুরনীয়। তিনি সরকারের কাছে কৃষকদের জন্য প্রনোদনার দাবী জানান।

এদিকে এ বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার রায় বলেন, আসলেই ঘূর্ণিঝড়ের কারনে লবণ পানি ঢুকে আমাদের উপজেলায় প্রায় ১২০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। আমরা বিষয়টি মন্ত্রানালয়ে চিঠি দিয়েছি আশা করছি সরকার ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য প্রনোদনার ব্যবস্থা করবেন। আমরা যারা ক্ষতিগ্রস্থ তাদের চিহ্নিত করে প্রনোদনা দিব।